বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্র, দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকাশ পর্ব ১ ,১৯৭৭

আজকে আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্র, দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকাশ পর্ব ১ ,১৯৭৭সম্পর্কে আলোচনা করবো।

 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্র, দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকাশ পর্ব ১ ,১৯৭৭
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্র, দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকাশ পর্ব ১ ,১৯৭৭

 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্র, দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকাশ পর্ব ১ ,১৯৭৭

নাম

১ । এই প্রতিষ্ঠানের নাম “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ” হইবে ।

লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

২। (ক) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি জাতির ঐক্য ও সংহতি বিধান, নর-নারী ও ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধান এবং মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের স্বীকৃতি, মানুষের স্বাভাবিক জীবন বিকাশের পরিপূর্ণ সুযোগ সৃষ্টি, ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, সকল সাম্প্রদায়িকতার বিলোপ সাধন, কৃষক-শ্রমিকসহ সকল মেহনতি ও অনগ্রসর জনগণের উপর শোষণ অবসানের জন্য পূর্ণ অর্থনৈতিক মুক্তি ও সামাজিক স্বাধীনতা এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শোষণমুক্ত ও সুষম সামাভিত্তিক এক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, সর্বাঙ্গীণ গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি ব্যবস্থার আমূল সংস্কার ও ক্রমিক যান্ত্রিকীকরণ এবং সমবায় ভিত্তিতে চাষাবাদ পদ্ধতির প্রচলন, কৃষি ও শিল্পের প্রসার এবং উৎপাদন বৃদ্ধি, উৎপাদন ও বণ্টন নিয়ন্ত্রণে কৃষক শ্রমিকের অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান, মানুষের সাধারণ জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, বেকারত্ব দূরীকরণ ও অধিকতর কর্মসংস্থান, সমাজের প্রয়োজনের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ গণমুখী সার্বজনীন সুলত গঠনাত্মক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন, অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, স্বাস্থ্য রক্ষাসহ মানুষের দৈনন্দিন জীবনধারণে মৌলিক সমস্যাবলীর সুসমাধান, স্বয়ংসম্পূর্ণ ও স্বয়ম্ভর অর্থনীতির সুদৃঢ় ভিত্তি রচনা, ব্যক্তিগত সম্পত্তির সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ, বিচার ব্যবস্থার কালোপযোগী জনকল্যাণকর পরিবর্তন সাধন এবং গণজীবনের সর্বস্তর হইতে দুর্নীতির মূলোচ্ছেদ করা- এই সকল নীতিসমূহ ও উদ্দেশ্যাবলী সমগ্র জনগণের ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহত উদাম সৃষ্টির মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পন্থায় বাস্তবে রূপায়িত করিতে অবিচল নিষ্ঠা, সততা, শৃঙ্খলা ও দৃঢ়তার সহিত সর্বতোভাবে আত্মনিয়োগ করিবে ।

(খ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিশ্বভ্রাতৃত্ব ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার সকল প্রচেষ্টায় সাহায্য ও সহযোগিতা করিবে এবং সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ ও বর্ণবৈষম্যবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সর্বত্র নিপীড়িত জনগণের ন্যায়সঙ্গত মুক্তির সংগ্রামকে সমর্থন করিবে ।

 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্র, দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকাশ পর্ব ১ ,১৯৭৭
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্র, দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকাশ পর্ব ১ ,১৯৭৭

 

 

পতাকা

৩। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পতাকা হইবে দুই-তৃতীয়াংশ সবুজ এবং এক-তৃতীয়াংশ লাল সবুজের উপর চারটি লাল বর্ণের তারকা খচিত থাকিবে ।

গঠন প্রণালী

নিম্নলিখিত সাংগঠনিক ইউনিট সমবায়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠিত হইবে।-

(ক) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনী অধিবেশন, বার্ষিক অধিবেশন এবং বিশেষ অধিবেশন ।

(খ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল

(গ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহ সংসদ (ওয়ার্কিং কমিটি) ।

(ঘ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংসদীয় (পার্লামেন্টারি) পার্টি।

(ঙ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংসদীয় (পার্লামেন্টারি) বোর্ড।

(চ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক অনুমোদিত জেলা আওয়ামী লীগসমূহ, ঢাকা নগর আওয়ামী লীগ এবং উহাদের অন্তর্ভুক্ত শাখা আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠানসমূহ ।

৪। (ক) এই গঠনতন্ত্রের ২ ধারায় বর্ণিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নীতি ও উদ্দেশ্য বিশ্বাস করিয়া নির্ধারিত ফরমে (ফরম-ক) প্রদত্ত ঘোষণাপত্রে দস্তখত করিয়া দ্বি-বার্ষিক ২ টাকা চাঁদা প্রদান করিয়া, ১৮ বৎসর বয়স্ক বা তদূর্ধ্ব বয়ঙ্ক বাংলাদেশের নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেক নাগরিক, যাঁহারা স্বীকার করেন নাই,

(১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, অর্থ-ত্ব, জাতীয় সংহতি ও রাষ্ট্রীয় আদর্শ বিরোধী জননিরাপত্তা বিরোধী ও হিংসাত্মক কার্যকলাপে লিপ্ত রহিয়াছেন বলিয়া প্রতীয়মান নহেন,

(২) কোনো বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন নাই কিংবা কোন বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন নাই

(৩) অন্য কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য নহেন,

(8) কোন প্রকার ধর্ম, পেশা এবং জন্মগত শ্রেণি-বৈষম্যে বিশ্বাস করেন না,

(৫) আওয়ামী লীগের নীতি ও আদর্শের পরিপন্থী কোনো সংগঠনের সদস্য নহেন,

(৬) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহ সংসদ কর্তৃক নির্দেশিত ন্যূনতম প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা ও যে কোনো নির্দেশ পালনে বাধ্য থাকিবেন, এবং

(৭) দ্বি-বার্ষিক চাঁদা নিয়মিত পরিশোধ করেন, তাঁহারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্য হইতে পারিবেন।

৪। (খ) সদস্য পদের মেয়াদ বাংলা বৎসরের পহেলা বৈশাখ হইতে পরবর্তী বৎসরের চৈত্র মাসের শেষ দিন পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে। এই উপধারায় উল্লিখিত মেয়াদ অন্তে ৪ (ক) ধারায় নির্ধারিত হারে চাঁদা প্রদান করিয়া নির্ধারিত ফরমে (ফরম-খ) দস্তখত করিয়া সদস্যপদ পুনরুজ্জীবিত করা যাইবে।

 

 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্র, দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকাশ পর্ব ১ ,১৯৭৭
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্র, দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকাশ পর্ব ১ ,১৯৭৭

 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মকর্তাগণ

৫। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিম্নলিখিত কর্মকর্তা থাকিবেন :-

(ক) সভাপতি।

(খ) ৩ জন সহ-সভাপতি (ক্রমিক মান অনুসারে) যথা :-

প্রথম সহ-সভাপতি,

দ্বিতীয় সহ-সভাপতি,ও

তৃতীয় সহ-সভাপতি ।

(গ) সাধারণ সম্পাদক ।

(ঘ) সম্পাদক সংগঠন বিভাগ (সংক্ষেপে সাংগঠনিক সম্পাদক) ।

(ঙ) সম্পাদক প্রচার বিভাগ (সংক্ষেপে প্রচার সম্পাদক)।

(চ) সম্পাদক – অফিস ও আবাস বিভাগ (সংক্ষেপে অফিস সম্পাদক)।

(ছ) সম্পাদক – শ্রম বিভাগ (সংক্ষেপে শ্রম সম্পাদক)।

(জ) সম্পাদক কৃষি বিভাগ (সংক্ষেপে কৃষি সম্পাদক)।

(ঝ) সম্পাদক সমাজ কল্যাণ, সংস্কৃতি ও সাহায্য বিভাগ (সংক্ষেপে সমাজ কল্যাণ ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক)।

(ঞ) সম্পাদিকা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মহিলা বিভাগ।

(ট) সম্পাদক, যুব বিভাগ (সংক্ষেপে যুব সম্পাদক)।

(ঠ) কোষাধ্যক্ষ।

৬। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের দ্বি-বার্ষিক সভায় কাউন্সিল সদস্যদের মধ্য হইতে তাঁহাদের দ্বারা ৫ ধারার উল্লেখিত কর্মকর্তাগণ দুই বৎসর কালের জন্য নির্বাচিত হইবেন এবং পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত স্ব স্ব পদে বহাল থাকিবেন ।

৭ । নিম্নলিখিত নিয়ম অনুসারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল গঠিত হইবে ।

(ক) প্রতি দুই বছর অন্তর জেলা আওয়ামী লীগসমূহ ও ঢাকা নগর আওয়ামী লীগ দ্বারা নির্দিষ্ট সংখ্যক নির্বাচিত কাউন্সিলার সমবায়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল গঠিত হইবে। জেলা আওয়ামী লীগসমূহ ও ঢাকা নগর আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মকর্তা নির্বাচনের উদ্দেশ্যে আহুত দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনী সভার নির্দিষ্ট তারিখের পূর্বে এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহ সংসদ কর্তৃক নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে তাহাদের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনী কাউন্সিল সভায় তাহাদের নিজস্ব কর্মকর্তা ও তাহাদের জেলা হইতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক সদস্য নির্বাচন করিয়া তাহাদের পূর্ণ ঠিকানাসহ নামের তালিকা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অফিসে অবশ্যই প্রেরণ করিবে ।

(খ) প্রত্যেক জেলায় প্রতি ৫০ হাজার জনসংখ্যার জন্য একজন করিয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হইবেন। ঢাকা নগর আওয়ামী লীগ হইতে প্রতি ২০ (বিশ) হাজার জনসংখ্যার জন্য একজন করিয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হইবেন। ভগ্নাংশের বেলায় জেলাসমূহ প্রতি ২৫ হাজার বা তদূর্ধ্ব জনসংখ্যার জন্য একজন এবং ঢাকা নগরী এবং অন্যান্য পৌর এলাকাসমূহ প্রতি ১০ হাজার বা তদূর্ধ্ব জনসংখ্যার জন্য একজন কাউন্সিলার নির্বাচন করিবে ।

(গ) কোনো জেলা বা নগর আওয়ামী লীগ কোনো কারণবশত যদি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহ সংসদ কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক কাউন্সিলার ও তাহাদের নিজস্ব কর্মকর্তা প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্র ও নিয়মাবলী অনুসারে নির্বাচন করিতে না পারে, তাহা হইলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহ সংসদ উক্ত জেলা বা নগরের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের নির্দিষ্ট সংখ্যক কাউন্সিলার মনোনয়ন দান করিতে পারিবে ।

(ঘ) উপরোক্ত নির্বাচিত বা মনোনীত কাউন্সিলারগণ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মকর্তা নির্বাচনের উদ্দেশ্যে আহুত দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনী সভার প্রথম অধিবেশনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যে কোনো শাখায় প্রাথমিক সদস্যভুক্ত ৫০ জন সদস্যকে কো-অপট করিয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের সদস্যভুক্ত করিয়া লইবেন

৮। (গ) ধারার উল্লেখিত মনোনীত কাউন্সিলারগণ নির্বাচিত কাউন্সিলারদের সর্বপ্রকার অধিকার ভোগ করিবেন । কিন্তু মনোনয়নের পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে ঐ সব জেলা বা নগর (ঢাকা) আওয়ামী লীগের নির্বাচনের ব্যবস্থা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে করিতে হইবে।

উক্ত জেলা বা নগর (ঢাকা) উহার নিজস্ব কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক সদস্য নির্বাচন করার পর নির্বাচিত সদস্যগণ উক্ত জেলা বা নগর (ঢাকা) আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক মঞ্জুরি প্রাপ্ত হওয়ার পর আপনা আপনি মনোনীত কাউন্সিলারদের স্থলাভিষিক্ত হইবে। মনোনয়ন দান হইতে নূতন নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত মধ্যবর্তীকালের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহ সংসদ উক্ত জেলা বা নগরের (ঢাকা) পূর্ববর্তী কমিটিকে বা তদস্থলে এডহক কমিটি গঠন করিয়া উহাকে দৈনন্দিন কার্য চালাইয়া যাওয়ার নির্দেশ দিতে পারিবে।

৯। মনোনয়ন, কো-অপশন বা কোনো শাখা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ত্রুট-বিচ্যুতির অজুহাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল অন্যায়রূপে গঠিত হইয়াছে বলিয়া অভিযোগ করা চলিবে না এবং কাউন্সিলের কোনো কার্য বা সিদ্ধান্ত ঐ কারণে রদ, বাতিল, বে-আইনী বা গঠনতন্ত্র বহির্ভূত বলিয়া বিবেচিত হইবে না ।

১০। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচিত কো-অপশনকৃত বা মনোনীত কাউন্সিলারগণ সভায় যোগদান করিবার পূর্বে দ্বি-বার্ষিক ১০.০০ টাকা চাঁদা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট প্রদান না করিলে কাউন্সিল সভায় যোগদান করিতে পারিবেন না ।

১১। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোনো কাউন্সিলার যদি তাঁহার নির্বাচনের প্রথম চার মাসের মধ্যে তাঁহার দ্বি-বার্ষিক ১০.০০ টাকা চাঁদা পরিশোধ না করেন তবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যকরী সংসদ তাঁহার কাউন্সিল সদস্যপদ খারিজ করিয়া তদস্থলে নুতন কাউন্সিলার মনোনীত করিতে পারিবে, তবে সদস্যপদ খারিজ করার পূর্বে উক্ত সদস্যকে এ দিনের মধ্যে দেয় চাপা পরিশোধ করার জন্য নির্দেশ দিয়া পোস্টাল রেজিস্ট্রেশন যোগে নোটিশ নিতে হইবে।

 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্র, দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকাশ পর্ব ১ ,১৯৭৭
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠনতন্ত্র, দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকাশ পর্ব ১ ,১৯৭৭

 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহ সংসদ

১২। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, ৩ জন সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সম্পাদক সংগঠন বিভাগ সম্পাদক প্রচার বিভাগ, সম্পাদক – দফতর ও আবাস বিভাগ, সম্পাদক শ্রম বিভাগ, সম্পাদক – কৃষি বিভাগ, সম্পাদক সমাজ কল্যাণ, সংস্কৃতি ও সাহায্য বিভাগ, সম্পাদিকা মহিলা বিভাগ, সম্পাদক যুব বিভাগ এবং কোষাধ্যক্ষ এই ১৪ জন কর্মকর্তা ব্যতীত আরও ২৭ জন সদস্য লইয়া মোট ৪১ জন সদস্য সমবায়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহ সংসদ গঠিত হইবে।

১৩। ১২ ধারায় বর্ণিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ১৪ জন কর্মকর্তা ব্যতীত কার্যনির্বাহ সংসদের ২৭ জন সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি কর্তৃক মনোনীত হইবেন এবং উক্ত মনোনয়ন সভাপতির নির্বাচনের ২১ দিনের মধ্যে অবশ্যই ঘোষণা করিতে হইবে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল সভা

১৪ । সভাপতির নির্দেশ বা অনুমোদনক্রমে সাধারণ সম্পাদক যে কোনো সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল সভা আহবান করিতে পারিবেন। বি-বার্ষিক নির্বাচনী অধিবেশন ব্যতীত বৎসরে অন্তত একবার বাংলাদেশ আওয়াই লীগের কাউন্সিল সভা আহ্বান করিতে হইবে । এতদ্ব্যতীত ন্যূনপক্ষে ১৫০ জন সদস্যের স্বাক্ষর ও আলোচ্য বিষয় সম্বলিত রিকুইজিশনপত্র সাধারণ সম্পাদক বা সভাপতির নিকট দাখিল করিবার ৩০ দিনের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক নিজে বা সভাপতির নির্দেশে কাউন্সিল সভা আহ্বান করিতে বাধ্য থাকিবেন। ২২৫ জন সদস্য উপস্থিত হইলে কাউন্সিল সভার কোরাম হইবে কিন্তু মুলতবী সভার জন্য কোনো কোরামের প্রয়োজন হইবে না।

১৫। (ক) উপরোক্ত যে কোনো কাউন্সিল সভার সভাপতি এবং তাঁহার অনুপস্থিতিতে ক্রমিক মান অনুসারে সহ-সভাপণ্ডিত্রয় বা তাঁহাদের অনুপস্থিতিতে সদস্যদের যে কেহ নির্বাচিত হইয়া সভাপতিত্ব করিবেন।

(খ) রিকুইজিশনপত্র পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে যদি সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক সভা আহ্বান না করেন। তবে রিকুইজিশনকারী সদস্যাগণ ৩০ দিন পরে নিজেরাই ২১ দিনের নোটিশ দিয়া সভা আহ্বান করিতে পারিবেন ।

১৬। কার্যনির্বাহ সংসদের নির্ধারিত স্থান, তারিখ ও সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিলেরবিশেষ বা বার্ষিক যা দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হইবে ।

১৭। কাউন্সিলের বিশেষ বা বার্ষিক বা দ্বি-বার্ষিক অধিবেশনে সমস্ত জেলা বা ঢাকা নগর আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আমন্ত্রণক্রমে তাহাদের জেলা বা নগর হইতে নির্বাচিত কাউন্সিলারের সমসংখ্যক ডেলিগেট পাঠাইতে পারিবে । উক্ত ডেলিগেটগণ প্রত্যেকে ১০.০০ টাকা হারে চাঁদা প্রদান করিয়া উক্ত অধিবেশনে যোগদান করিতে পারিবেন এবং আলোচনায় অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন, কিন্তু ভোট দিতে পারিবেন না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনী কাউন্সিল সভায় নির্বাচিত, কো-অপশনকৃত বা মনোনীত কাউন্সিলারগণ ব্যতীত অন্য কোনো লোক বিনা আমন্ত্রণে যোগদান বা অংশগ্রহণ করিতে পারিবেন না ।

১৮ । কাউন্সিলের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনী সভা, বার্ষিক সভা বা বিশেষ সভার জন্য সাধারণত ১৫ দিনের ও জরুরি সভার ৭ দিনের নোটিশ দিতে হইবে । নোটিশে আলোচ্য বিষয় অবশ্যই উল্লেখ করিতে হইবে ।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের সভা

১৯। সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা আহ্বান করিবেন।সভাপতির নির্দেশক্রমেও সাধারণ সম্পাদক উক্ত সংসদের সভা আহ্বান করিতে বাধ্য থাকিবেন। সভাপতির নির্দেশক্রমে সাধারণ সম্পাদক সভা আহ্বান না করিলে, সভাপতি নিজেই সভা আহ্বান করিতে পারিবেন। কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় ১১ জন সদস্যের উপস্থিতিতে কোরাম হইবে ।

২০। কার্যনির্বাহী সংসদের সভার জন্য সাধারণতঃ ৭ দিনের নোটিশ দিতে হইবে। কিন্তু জরুরি সভার জন্য কোন নির্দিষ্ট সময়ের নোটিশের প্রয়োজন হইবে না আবশ্যক হইলে সংবাদপত্রের মাধ্যমেও নোটিশ দিয়া স করা চলিবে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের কার্যাবলী ও ক্ষমতা

২১। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল নিম্নলিখিত কার্যাবলী সম্পন্ন ও ক্ষমতাসমূহ প্ৰয়োগ করিবে ।

(ক) গঠনতন্ত্রের ৫ ধারায় উল্লেখিত কর্মকর্তা নির্বাচন
(খ) আওয়ামী লীগের নীতি ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে যে কোনো প্রস্তাব গ্রহণ।
(গ) আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা সংশোধন করিবার প্রস্তাব গ্রহণ
(ঘ) আওয়ামী লীগের নির্বাচনী বা বার্ষিক বা বিশেষ অধিবেশনে গৃহীত প্রস্তাবসমূহ কার্যকরী করা।
(ঙ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হিসাব-নিকাশ গ্রহণ ও অনুমোদন করা:
(চ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যে কোন সদস্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহ সংসদ কর্তৃক শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আপীল বিবেচনা ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ;
(ছ) আওয়ামী লীগ কাউন্সিল সভাসমূহ পরিচালনা করার নিয়মাবলী প্রণয়ন করা;
(জ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য সাধন করার প্রয়োজনে যে কোন কর্মপন্থা গ্রহণ করা;
(ঝ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটি সংসদীয় (পার্লামেন্টারি) বোর্ড গঠন করা;
(ঞ) সংসদীয় পার্টি পরিচালনার জন্য নিয়মাবলী প্রণয়ন করা;
(ট) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল বিনা শর্তে বা শর্তাধীনে যে কোনো ক্ষমতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যকরী সংসদের উপর ন্যস্ত করিতে পারিবে।

 

google news logo
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহ সংসদের কার্যক্রম ও ক্ষমতা

২২। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহ সংসদ নিম্নলিখিত কার্যাবলী সম্পন্ন ও ক্ষমতাসমূহ প্রয়োগ করিবে :-

(ক) শাখা আওয়ামী লীগসমূহকে মঞ্জুরী প্রদান, বাতিল করা, পুনর্নির্বাচনের ব্যবস্থা করা যা প্রয়োজনবোধে যে কোনো শাখা কমিটি বাতিল করিয়া তদস্থলে এডহক কমিটি গঠন করা এবং এডহক কমিটি গঠনের ৩ মাসের মধ্যে উক্ত শাখার নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। অন্যথায় ৩ মাস পরে এডহক কমিটি বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে ।

(খ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল, জাতীয় কমিটি, কার্যনির্বাহ সংসদ বা অন্য কোনো কমিটি বা
সংসদীয় বোর্ডের সদস্যপদ বা আওয়ামী লীগের কোনো কর্মকর্তার পদ শূন্য হইলে কো-অপশন বা মনোনয়ন যারা তাহা পূরণ করা।

(গ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদীয় পার্টি বা উহার কোনো সদস্যের প্রতি নির্দেশ, উপদেশ ও নিয়ন্ত্রণাদেশ দেওয়ার ক্ষমতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহ সংসদের থাকিবে এবং উপরোক্ত সদস্যদের কেহ উহা অমান্য করিলে অথবা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠানের নীতি ও উদ্দেশ্যের পরিপন্থী কোনো কাজ করিলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহ সংসদ উক্ত পার্টি বা সদস্যের বিরুদ্ধে যে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।

(ঘ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিলে দাখিল করিবার উদ্দেশ্যে বার্ষিক আয় ব্যয়ের হিসাব প্রস্তুত করা।

(ঙ) ১,০০,০০০ টাকার উর্ধ্বে যে কোনো ব্যয় অনুমোদন করা।

(চ) সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক কর্মচারী নিয়োগ বা বরখাস্ত অনুমোদন করা ।

(ছ) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহ সংসদের যে কোনো সদস্য বিনা কারণে বা সন্তোষজনক কারণ ব্যতিরেকে পরপর তিনটি সাধারণ সভায় অনুপস্থিত থাকিলে তাহার নাম কার্যনির্বাহ সংসদের তালিকা হইতে খারিজ করা। কিন্তু খারিজ করিবার পূর্বে উক্ত সদস্যকে নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে সন্তোষজনক কারণ দর্শাইবার জন্য পোস্টাল রেজিস্ট্রেশন যোগে নোটিশ প্রान করিতে হইবে ।

(জ) ১৬ ধারা মতে আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের নির্বাচনী বা বার্ষিক বা বিশেষ অধিবেশন আহ্বান ও তাহার তারিখ, স্থান ও আলোচ্য বিষয় নির্ধারণ করা।

(ঝ) আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ করিবার তারিখ নির্ধারণ করা, বিভিন্ন শাখার নির্বাচনের তারিখ ধার্য করা এবং বাংলাদেশ আদমশুমারী অনুসারে ৭(খ) ধারায় উল্লেখিত জনসংখ্যার ভিত্তিতে কোনো জেলা বা ঢাকা নগর হইতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের জন্য কত জন সদস্য নির্বাচিত হইবেন উহা হিসাব করিয়া জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচনের পূর্বে উপযুক্ত নোটিশ প্রদান করা।

(ঞ) আবশ্যক বোধে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগীয় সম্পাদকের কার্যক্রম নির্ধারণ করা।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্মকর্তাদের কার্যাবলী ও ক্ষমতা

২৩। (ক) সভাপতি :

তিনি প্রতিষ্ঠানের সর্বপ্রধান কর্মকর্তা হিসাবে গণ্য হইবেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল অধিবেশনে এবং কার্যনির্বাহ সংসদের সভায় সভাপতিত্ব করিবেন এবং আবশ্যক বোধে প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্রের যে কোনো ধারা ব্যাখ্যা করিয়া রুলিং দিতে পারিবেন ও যে কোন ধারার ব্যাখ্যা সম্পর্কে কাউন্সিলের বা কার্যনির্বাহ সংসদের মতামত লইতে পারিবেন। তিনি সাধারণ সম্পাদককে কাউন্সিল বা কর্মনির্বাহ সংসদের সভা আহ্বানের নির্দেশ দিতে পারিবেন এবং প্রয়োজনবোধে তিনি ১৪ ও ১৯ ধারা মতে কাউন্সিল বা কার্যনির্বাহ সংসদের সভা আহ্বান করিতে পারিবেন।

তিনি ১৩ ধারা অনুসারে কার্যনির্বাহ সংসদের সদস্য মনোনীত করিবেন। তিনি কাউন্সিল অধিবেশনের সময় বিষয় নির্বাচনী কমিটির সদস্যগণকে মনোনীত করিতে পারিবেন। তিনি কাউন্সিল বা কাৰ্যনিৰ্বাহ সংসদ কর্তৃক প্রদত্ত যে কোনো ক্ষমতা গ্রহণ ও প্রয়োগ করিতে পারিবেন। রাষ্ট্রের ঐক্য, নিরাপত্তা ও সবসময় মঙ্গল সাধনের জন্য প্রতিষ্ঠানের সর্বাঙ্গীন উন্নতি, অগ্রগতি ও শ্রীবৃদ্ধিই তাঁহার লক্ষ্য হইবে। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহ সংসদ বা কাউন্সিলের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানের মঙ্গলের জন্য যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন।

(খ) সহ-সভাপতি :

ক্রমিক মান অনুসারে প্রতিষ্ঠানের তিন জন সহ-সভাপতি যথাক্রমে প্রথম সহ-সভাপতি, দ্বিতীয় সহ-সভাপতি ও তৃতীয় সহ-সভাপতি থাকিবেন। সভাপতির অনুপস্থিতিতে তাঁহারা সভাপতির সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী হইবেন । ইহা ব্যতীত তাঁহারা সভাপতি কর্তৃক অর্পিত কার্যাবলী সম্পন্ন করিবেন ।

(গ) সাধারণ সম্পাদক :

তিনি প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মসচিব বলিয়া পরিগণিত হইবেন। তিনি সমস্ত বিভাগীয় সম্পানকরে তাহাদের বিভাগীয় কার্যাবলী সম্পাদন করিবার জন্য উপদেশ ও নির্দেশ দিতে পারিবেন। মাসে অন্ততঃ একবার তিনি বিভাগীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সভা ডাকিবেন এবং উক্ত সভায় বিভাগীয় কার্যাবলীর অগ্রগতি সম্বন্ধে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবেন; কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভার কার্যনির্বাহ সংসদের উপর নাস্ত থাকিবে।

তিনি কার্যনির্বাহ সংসদের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী নিয়োগ, বরখাস্ত, বেতন বৃদ্ধি বা হ্রাস, ছুটি মঞ্জুর ও শান্তির ব্যবস্থা করিতে পারিবেন। তিনি কার্যনির্বাহ সংসদের ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত যাহাতে বিভিন্ন বিভাগের মাধ্যমে পরিপূর্ণভাবে কার্যকরী হয় তাহার বিধি ব্যবস্থা করিবেন। সাধারণ সম্পাদক প্রত্যেকটি কাউন্সিল সভায় প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলী সম্বন্ধে রিপোর্ট পেশ করিবেন। এতভিন্ন যে ক্ষমতা কাউন্সিল বা কার্যনির্বাহ সংসদ তাঁহার উপর ন্যস্ত করিবে তাহাও তিনি প্রয়োগ করিবেন।

তিনি বিভাগীয় সম্পাদকের নিজ নিজ বিভাগীয় কার্যাবলী ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের যে কোনো কাজ সম্পাদন করিবার জন্য যে কোনো বিভাগীয় সম্পাদকের উপর ভার দিতে পারিবেন এবং তাঁহারা তাহা পালন করিতে বাধ্য থাকিবেন। সাধারণ সম্পাদক কার্য উপলক্ষে অনুপস্থিত থাকিলে অনুপস্থিত কালের জন্য তিনি তাঁহার সমস্ত কার্য ও দায়িত্ব পালনের ভার ক্রমিক মান অনুসারে বিভাগীয় সম্পাদকদের উপর নাস্ত করিতে পারিবেন ।

(ঘ) বিভাগীয় সম্পাদকমণ্ডলীঃ

তাঁহারা নিজ নিজ বিভাগীয় কার্যাবলী সম্পাদন করিবেন এবং সাধারণ সম্পাদক, কার্যনির্বাহ সংসদ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত নির্দেশ ও উপদেশাবলী কার্যকরী করিবেন। বিভাগীয় সম্পাদকগণ নিজ নিজ বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাবলী সমাধানের জন্য কার্যনির্বাহ সংসদের সভা আহ্বানের প্রয়োজন মনে করিলে সাধারণ সম্পাদককে উক্ত সমস্যা জানাইয়া সভা আহবানের অনুরোধ করিতে পারিবেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রত্যেক কাউন্সিল সভায় বিভাগীয় সম্পাদকম-লী সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট মারফত তাঁহাদের স্ব স্ব বিভাগের কার্যাবলীর অগ্রগতি সম্পর্কে কাউন্সিলারগণকে অবহিত করিবেন।

মহিলা সম্পাদিকাঃ

একজন মহিলাকে মহিলা বিভাগের সম্পাদিকা নির্বাচিত করা হইবে। তিনি আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠানের একটি মহিলা ফ্রন্ট গঠন করিয়া সারাদেশে মহিলাদিগকে সদস্যাভুক্ত করিবেন । তাঁহার অধীনস্থ মহিলা ফ্রন্টের যাবতীয় ব্যয়ভার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তহবিল হইতে বহন করা হইবে। মহিলা সম্পাদিকা নারী জাতির বিভিন্ন সমস্যা এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নীতি ও উদ্দেশ্য প্রচার করিবেন ।

এতদউদ্দেশ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি মহিলা সম্পাদিকার নেতৃত্বে জেলা, ঢাকা নগর, থানা, ইউনিয়ন ও ইউনিট পর্যন্ত অনুরূপ উপ-সংসদ গঠন করিবার ক্ষমতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতির থাকিবে। তিনি ২৩ সদস্যা বিশিষ্ট একটি মহিলা উপ-সংসদ মনোনয়নের মাধ্যমে গঠন করিবেন।

সভাপতি, ৩ জন সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদিকা, সাংগঠনিক সম্পাদিকা, প্রচার সম্পাদিকা, সমাজ কল্যাণ সম্পাদিকা ও ১৫ জন সদস্যা লইয়া বাংলাদেশ মহিলা উপ-সংসদ গঠিত হইবে এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা এই উপ- সংসদের সাধারণ সম্পাদিকা থাকিবেন। জেলা, নগর, (ঢাকা) ও উহাদের নিম্নস্থ উপ-সংসদ সমূহ বাংলাদেশ উপ-সংসদের অনুরূপ হইবে।

যুব সম্পাদক :

একজন যুব কর্মীকে যুব বিভাগের (যাহা যুবলীগ নামে অভিহিত হইবে) সম্পাদক নির্বাচন করা হইবে। তিনি আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠানে একটি যুব ফ্রন্ট গঠন করিয়া সারাদেশে যুব সমাজকে সদস্যভুক্ত করিবেন । তাহার অধীনস্থ যুব শাখার যাবতীয় ব্যয়ভার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তহবিল হইতে বহন করা হইবে।

দেশের যুবশক্তিকে সুসংহত করিয়া দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সার্বিক কল্যাণার্থে যুবশক্তিকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো, যুবসমাজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এবং যুবশক্তিকে সেবামূলক কাজে প্রবৃত্ত করার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের আদর্শ ও উদ্দেশ্যকে সফল করিয়া তোলাই হইবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব শাখার উদ্দেশ্য। এই উদ্দেশ্যকে সফল করার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি যুব সম্পাদকের নেতৃত্বে জেলা, পর্যন্ত অনুরূপ উপ- গঠন করিবেন। তিনি ২৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি খুব উপ-সংসদ মনোনয়নের মাধ্যমে গঠন করিবেন।

সভাপতি, ৩ জন সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক, সমাজ কল্যান সম্পাদক ও ১৫ জন সদস্য পইচা উপরিউক্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের খুব উপ-সংসদ গঠিত হইবে এব বাংলাদেশ আওয়ামী খুব লীগের যুব সম্পাদক এই উপ-সংসদের সাধারণ সম্পাদক থাকিবেন। জেল, নগর (ঢাকা) ও উহাদের নিগ্রহ উপ-সংসদসমূহ বাংলাদেশ উপ- সংসদের অনুরূপ হইবে।

(ঙ) কোষাধ্যক্ষঃ

প্রতিষ্ঠানের সমস্ত অর্থ তাহার নিকট গচ্ছিত থাকিবে। তিনি সাধারণ সম্পাদকের নিকট হইতে লিখিত রসিদ পাইয়া অর্থ প্রদান করিবেন। ব্যাংকের গচ্ছিত অর্থ কোষাধ্যক্ষ ও সাধারণ সম্পাদকের যুক্ত স্বাক্ষরে উঠানো যাইবে ।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment