মিয়া আবদুল্লা নিয়াজী – কে নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “আকবর” বিষয়ের “হেমচন্দ্ৰ হেমু” বিভাগের একটি পাঠ। মিয়া আবদুল্লা নিয়াজী আফগান (পাঠান) সম্ভবত ভারতে এসে এখানেই বসবাস করতে শুরু করেন। মেহ্দীর মতো তাঁর সম্বন্ধেও জানা যায় না ঠিক কত সনে তাঁর জন্ম হয়েছিল। শেরশাহের আমলে (১৫৪০-৪৫ খ্রিঃ) তিনি খুবই বৃদ্ধ ছিলেন। হতে পারে, সৈয়দ মুহম্মদ জৌনপুরীর জীবনের শেষ দিকেই তাঁর জন্ম।
মিয়া আবদুল্লা নিয়াজী
কয়েক বছর তিনি মক্কা- মদীনায় কাটান। সেখানেই তিনি জিন্দিক কিংবা মেহ্দীর মতবাদে প্রভাবিত হন । ভারতে এসে বায়ানায় (রাজস্থান) গরিবদের এক মহল্লায় ডেরা বাঁধেন। তিনি নিজে কায়িক পরিশ্রম করতে কুণ্ঠিত হতেন না, মেহনতী লোকজনের সঙ্গেই তাঁর বেশি আত্মীয়তা ছিল।
জালালুদ্দিন মুহাম্মদ আকবর ভারতবর্ষের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক। পৃথিবীর ইতিহাস এ মহান শাসকদের অন্যতম মহামতি আকবর নামেও পরিচিত। তিনি মুঘল সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট। পিতা সম্রাট হুমায়ুনের মৃত্যুর পর ১৫৫৬ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে আকবর ভারতের শাসনভার গ্রহণ করেন। বৈরাম খানের তত্ত্বাবধানে তিনি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্রাজ্য বিস্তার করতে থাকেন। ১৫৬০ সালে বৈরাম খাঁকে সরিয়ে আকবর নিজে সকল ক্ষমতা দখল করেন।
মুসলমানদের মধ্যে ভিস্তি এবং অন্য কাজকর্মে যারা মেহনত মজদুরী করে জীবন নির্বাহ করত, তারা নিয়াজীর কাছে যেত। নিয়াজী তাদের সঙ্গে নামাজ পড়তেন। তাঁর কাছে যা কিছু থাকত, তাই ভাগ করে তাদের খেতে দিতেন। তিনি বড় আলিম (পণ্ডিত) ছিলেন, ইসলাম সম্বন্ধে তাঁর ভালো জ্ঞান ছিল।
ইসলাম ধর্মের জন্মভূমিতে তিনি কাটিয়ে এসেছেন কয়েক বছর। এরূপ ব্যক্তির এমন সাদাসিধে ও দরিদ্র জীবনযাপন দেখে মানুষ তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হবে, সেটাই স্বাভাবিক। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বায়ানার এক গুরু ঘরানার শেখ আল্লাঈ, তিনি পীরের গদিতে আসীন ছিলেন। নিয়াজীর সঙ্গে হাতে হাত মেলালেন তিনি। তখন থেকে গুরু-শিষ্যের জীবনস্রোত এক খাতে প্রবাহিত হতে লাগল ।
আরও দেখুনঃ