আকবরের কবিতা

আকবরের কবিতা – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “আকবর” বিষয়ের “শিল্প ও সাহিত্য” বিভাগের একটি পাঠ। রাজ্য শাসনের জন্য আকবর আমলাতন্ত্র চালু করেন এবং প্রদেশগুলোকে স্বায়ত্বশাসন দান করেন। আকবরের আমলাতন্ত্র বিশ্বের সবথেকে ফলপ্রসূ আমলাতন্ত্রের মধ্যে অন্যতম। তিনি প্রত্যেক অঞ্চলে সামরিক শাসক নিয়োগ দেন। প্রত্যেক শাসক স্বশাসিত প্রদেশের সেনাবাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন।

আকবরের কবিতা

 

আকবরের কবিতা | শিল্প ও সাহিত্য | আকবর

 

আকবর কেবল কাব্য ও সাহিত্যে অনুরাগী ছিলেন, তাই নয়, এমনকি নিজেও কখনো কখনো কবিতা রচনা করতেন। আবুল ফজল ‘আইনে-আকবরী’তে আকবরের বহু সৃক্তি সংগ্রহ করেছেন। তাঁর দরবারের নবরত্নের মধ্যে তানসেন, টোডরমল, বীরবল হিন্দী ভাষার কবি ছিলেন।

আকবর মুঘল সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট। পিতা সম্রাট হুমায়ুনের মৃত্যুর পর ১৫৫৬ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে আকবর ভারতের শাসনভার গ্রহণ করেন। বৈরাম খানের তত্ত্বাবধানে তিনি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্রাজ্য বিস্তার করতে থাকেন। ১৫৬০ সালে বৈরাম খাঁকে সরিয়ে আকবর নিজে সকল ক্ষমতা দখল করেন। কিন্তু আকবর ভারতবর্ষ ও আফগানিস্তানে তার সাম্রাজ্য বিস্তার চালিয়ে যান। ১৬০৫ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রায় সমস্ত উত্তর ভারত তার সাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে। আকবরের মৃত্যুর পর তার পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীর ভারতবর্ষের শাসনভার গ্রহণ করেন ও সাম্রাজ্য বিস্তারে মনোনিবেশ করেন।

 

আকবরের কবিতা | শিল্প ও সাহিত্য | আকবর

 

হিন্দী কবিতাচর্চাও আকবরের দরবারে হতো, তবে ফারসি অধিকাংশেরই মাতৃভাষা ও চির-প্রচলিত রাজভাষা ছিল, সে-কারণে ফারসি ভাষা দরবারে যে-স্থান লাভ করেছিল, হিন্দী ভাষা সেই স্থান লাভ করতে সমর্থ হয়নি, অথচ সেই স্থান পাওয়া উচিত ছিল তার। আকবরের মুখ থেকে নিঃসৃত কিছু পদ্য উদ্ধৃত করা যেতে পারে, কিন্তু তার প্রামাণিকতা বিষয়ে কিছু কি বলা সম্ভব? অবশ্য তাঁর ফারসি কবিতা অধিক প্রামাণিক বলে মনে হয়।

তিনি ইচ্ছা করলে অন্যান্য মহাকবিদের দিয়ে লিখিয়ে নিজের নামে তা প্রকাশ করতে পারতেন, আমাদের ইতিহাসে অনেক রাজাই তা করেছেন, কিন্তু আকবরের তা পছন্দ ছিল না। তাঁর ফারসি পদ্যের কিছু নমুনা দেখুন—

 

গিরিয়া কদম জ-গমত মুজিবে-খুশহালী শুদ্।

রেখতম্ খুনে-দিল আজ-দিদ দিলম্ খালি শুদ্।

 

 (তোমার দুঃখে আমি কেঁদেছি, এটা খুশির কারণ হল । চোখ থেকে হৃদয় থেকে রক্ত ঝরিয়ে আমার মন এখন নির্ভার।)

 

আকবরের কবিতা | শিল্প ও সাহিত্য | আকবর

 

 

দোশীন ব-কয় মঁও-ফারোশী। 

পয়মানে-ম্যায় ব-জর খরীদম্ । 

আকনূ জ-খুমার সর্গরাম্ ।

জর দাদম্ ওয়া দর্দে-সর খরীদম্ ।

 

 (রাতে সুরা বিক্রি-করা গলিতে পয়সা দিয়ে সুরার পাত্র কিনেছিলাম । এখন আমার খোয়ারিতে মাথা ঘুরছে । আমি পয়সা দিলাম আর কিনলাম মাথার যন্ত্রণা।)

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment