Site icon History Gurukul [ ইতিহাস গুরুকুল ] GDCN

আকবরের যন্ত্র প্রীতি

আকবরের যন্ত্র প্রীতি | মহান দ্রষ্টা | আকবর

আকবরের যন্ত্র প্রীতি – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “আকবর” বিষয়ের “মহান দ্রষ্টা” বিভাগের একটি পাঠ। নতুন নতুন আবিষ্কার ও নতুন নতুন যন্ত্রপাতির সর্বাগ্রে প্রয়োগ হয় যুদ্ধে । যুদ্ধের কারণেই মানুষ প্রস্তরের পরিবর্তে ধাতুর অস্ত্র, বারুদের অস্ত্র এবং শেষে পরমাণু বোমা আবিষ্কার করে। আকবরের সময় বারুদের অস্ত্র ছিল । কামান ও সলতে-যুক্ত বন্দুকের যুগ ছিল সেটা।

আকবরের যন্ত্র প্রীতি

 

আকবরের পিতামহ সর্বপ্রথম ভারতে কামান ব্যবহার করেন এবং সেই কামানের জোরেই শত্রুপক্ষের কয়েকগুণ বেশি সৈন্যকে ঘাস-পাতার মতো উড়িয়ে দিতেন । বাবর এই ভয়ংকর অস্ত্র ইরানের শাহ ইসমাইলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সূত্রে লাভ করেছিলেন । শাহ ইসমাইল তাঁর শত্রু তুর্কিদের কাছ থেকে এই অস্ত্রের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলেন ও তৈরি করিয়েছিলেন । তুর্কিরা নিজেরা কামান ও গাদা বন্দুক আবিষ্কার করেনি, বলতে গেলে তা ছিল ইউরোপীয়দের অবদান। যদিও অস্ত্র হিসেবে বারুদের ব্যবহার করেছিলেন চেঙ্গিস খাঁ ও তাঁর সেনাপতিরা ।

প্রথমে কামান দুর্গের উপর স্থাপন করা হতো, পরে কাষ্ঠনির্মিত বিশাল জাহাজকে ভ্রাম্যমাণ দুর্গের আকার দিয়ে তাতে কামান সন্নিবেশ করা হয়। সেই কারণেই আকবরের জাহাজ পোর্তুগিজদের মোকাবিলা করতে পারেনি। পোর্তুগিজদের কাছে চাওয়া কামানের জন্যই আসিরগড়ে লড়াই হয়েছিল। শেরশাহ ও হেমু ফিরিঙ্গিদের দিয়েই ভালো কামান ও বন্দুক নির্মাণ করান এবং ক্রয় করেন। এইসব বারুদের অস্ত্রের গুরুত্ব আকবরের চেয়ে আর কার তৈরি বোঝার ক্ষমতা ছিল?

 

 

তাঁর অস্ত্রশাস্ত্রের বড় বড় কারখানা ছিল, সেখানে দেশ-বিদেশের কারিগররা নতুন নতুন হাতিয়ার তৈরি করত। আকবর স্রেফ তামাশা দেখার জন্য কারখানায় যেতেন না, বরং জেস্যুইট সাধু পেরুশচির ভাষায়, “তা সে যুদ্ধ সম্পর্কিত বিষয়ই হোক কিংবা শাসন- সংক্রান্ত, বা কোনো যান্ত্রিক শিল্প সম্বন্ধীয়, এমন কোনো ব্যাপার ছিল না যা তিনি জানতেন না বা করতে পারতেন না। আকবর তাঁর মহলের প্রাঙ্গণের মধ্যেও কয়েকটা বড় বড় কারখানা স্থাপন করেছিলেন, তাতে অবসর সময়ে তিনি স্বয়ং হাতে হাতুড়ি-ছেনি তুলে নিতে দ্বিধা করতেন না।” তিনি হাতিয়ার ও যন্ত্রের কয়েকটি আবিষ্কার ও সংস্কার করেছিলেন, ‘আইনে আকবরী’তে আবুল ফজল তার উল্লেখ করেছেন।

 

 

ভিনসেন্ট স্মিথ বলেছেন— “তাঁর জীবনের এদিকটা মহান পিতরের মতোই মনে হতো।” চিতৌড় আক্রমণের সময় তিনি নিজের তত্ত্বাবধানে আধ-আধ মণের গোলা তৈরি করান । তিনি বন্দুক চালাতে খুবই সিদ্ধহস্ত ছিলেন এবং কদাচিৎ তাঁর বন্দুকের নিশানা লক্ষ্যভ্রষ্ট হতো।

 

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version