সঙ্গীতের প্রতি আকবরের শখ – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “আকবর” বিষয়ের “শিল্প ও সাহিত্য” বিভাগের একটি পাঠ। সঙ্গীতে আকবরের খুব শখ ছিল । প্রারম্ভিক সময়েই তিন তানসেনের কৃতিত্বের কথা শুনে বাঘেলা রাজা রামচন্দ্রের দরবার থেকে এই মহান সঙ্গীত-শিল্পীকে নিজের দরবারে আনিয়ে নেন। তানসেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আকবরের দরবারে থাকেন। তানসেন ব্যতীত আরও অনেক বিখ্যাত কালোয়াত আকবরের নিকটে ছিলেন।
সঙ্গীতের প্রতি আকবরের শখ
মঞ্চ কওয়াল সুফীদের কথা বড় সুন্দর ভঙ্গীতে গাইতেন। তাঁর গান শুনে একবার আকবর এত খুশি হন যে তিনি তানসেন ও অন্যান্য কালোয়াতকে ডাকিয়ে এনে তাঁর গান শোনান। তারপর তাঁকে অনূপ তালাব দেখিয়ে বললেন : যাও, তুমি ওগুলো তুলে নিয়ে যাও। মঞ্চ বেচারীর অত টাকা তুলে নিয়ে যাওয়ার সাধ্য কোথায়! তিনি প্রার্থনা করলেন, দাস যতটা নিতে পারে, যেন ততটাই নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। মঞ্চ সেখান থেকে এক হাজার টাকা তুলে নিয়ে যান ৷ আকবর অনূপ তালাবে ষোলো লক্ষেরও বেশি টাকা দিয়ে ভর্তি করিয়েছিলেন, পূর্বেই তা উল্লিখিত হয়েছে। গুপ্তযুগের পর আকবরের আমলেই শিল্প ও সাহিত্য, অর্থাৎ আমাদের সাংস্কৃতিক জীবন উচ্চতম শিখরে পৌছেছিল, এ থেকেই প্রতীয়মান হয় যে আকবরের আমলে রাষ্ট্রীয় চেতনায় বড় রকমের জাগরণ হয় ।
পৃথিবীর ইতিহাস এ মহান শাসকদের অন্যতম মহামতি আকবর নামেও পরিচিত। তিনি মুঘল সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট। পিতা সম্রাট হুমায়ুনের মৃত্যুর পর ১৫৫৬ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে আকবর ভারতের শাসনভার গ্রহণ করেন। বৈরাম খানের তত্ত্বাবধানে তিনি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্রাজ্য বিস্তার করতে থাকেন। ১৫৬০ সালে বৈরাম খাঁকে সরিয়ে আকবর নিজে সকল ক্ষমতা দখল করেন। কিন্তু আকবর ভারতবর্ষ ও আফগানিস্তানে তার সাম্রাজ্য বিস্তার চালিয়ে যান।

১৬০৫ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রায় সমস্ত উত্তর ভারত তার সাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে। আকবরের মৃত্যুর পর তার পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীর ভারতবর্ষের শাসনভার গ্রহণ করেন ও সাম্রাজ্য বিস্তারে মনোনিবেশ করেন।
আরও দেখুনঃ