মোল্লা আব্দুল্লা সুলতানপুরীর অবসান | মোল্লা আব্দুল্লা সুলতানপুরী | আকবর

মোল্লা আব্দুল্লা সুলতানপুরীর অবসান, আকবর সাম্রাজ্যশাসন পরিচালনার বল্গা স্বহস্তে ধারণ করেই দেশের ভবিষ্যতকে এক নতুন ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করতে মনস্থ করেন। রাজ্যের শাসনতন্ত্র শরীয়ত-কেন্দ্রিক নয়, প্রজাদের কল্যাণোপযোগী প্রণয়ন করতে চান।

মোল্লা আব্দুল্লা সুলতানপুরীর অবসান | মোল্লা আব্দুল্লা সুলতানপুরী | আকবর

 

মোল্লা আব্দুল্লা সুলতানপুরীর অবসান | মোল্লা আব্দুল্লা সুলতানপুরী | আকবর

 

মোল্লা কি শরীয়তের এই অবমাননা সহ্য করতে পারেন? বস্তুত তাঁর সমস্ত মাহাত্ম্যই শরীয়ত নির্ভর। যিনি হুমায়ূন, শেরশাহ, ইসলামশাহকে নিজের অঙ্গুলি-হেলনে নাচিয়ে এসেছেন, তিনি এক সদ্য-যুবকের মতামতকে কি বালভাষিত ভাববেন না? তবে পৃথিবীতে সকলেই একদা সদ্য-যুবক থাকে, তারপর সম্মুখে অগ্রসর হয়। আকবরের দরবারে এখন ফৈজী রাজকবি ও তাঁর নর্মসচিব। আবুল ফজল তাঁর প্রতিভা প্রদর্শনের জন্য এসে গেছেন। শেখ মুবারক জানিয়ে দিয়েছেন, মোল্লা কত গভীর জলের মাছ। 

আকবর মোল্লাকে একেবারে নগ্ন করার জন্য মনস্থির করে ফেললেন। ঐতিহাসিক বদায়ূনী লিখেছেন “আকবর প্রত্যেক শুক্রবার রাতে আলিম-ফাজিল, শেখ সৈয়দ এবং অন্যান্য পণ্ডিতদের আমন্ত্রণ জানাতেন। তিনি নিজেও সেই সভায় অংশগ্রহণ করে জ্ঞান-বিজ্ঞান আলোচনা শ্রবণ করতেন।

এটা শুরু হয়েছিল ১৫৭৩ খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি।” গোঁড়া মোল্লা সুলতানপুরীর সাদা দাড়িতে আগুন ধরানোর জন্য আকবরের নিকট আবুল ফজল, ফৈজী, আব্দুল কাদির, বদায়ূনীর মতো তরুণেরা ছিলেন, তাঁরা ইসলামী শরীয়তের নাড়ি-নক্ষত্র জানতেন এবং মিয়ার পায়ের জুতো মিয়ার মাথায় তুলে দিতে সক্ষম ছিলেন। মোল্লা বদায়ূনী লিখেছেন— “আকবর মখদুমুল্-মুল্‌ক্ মওলানা আব্দুল্লা সুলতানপুরীকে অপদস্থ করার জন্য সভায় ডেকে পাঠাতেন। হাজী ইব্রাহিম এবং নবধর্মের অনুগামী আবুল ফজলের সঙ্গে কয়েকজন নবীন আলিমকে তর্ক করার জন্য এগিয়ে দিতেন।

তাঁরা মোল্লার প্রত্যেক কথায় টিপ্পনি কাটতেন। বাদশাহের ঘনিষ্ঠ অনেক আমিরও তাতে যোগ দিতেন। মোল্লা সুলতানপুরী সম্পর্কে নানান গল্প তৈরি করে উপহাস করতেন। একদিন রাতে খানজাহান বললেন : মখদুমুল্-মুল্ক ফতোয়া দিয়েছিলেন, ‘আজকাল হজে যাওয়া ফরজ (কর্তব্য) নয়, বরং পাপ।’

বাদশাহ্ কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি কারণ ব্যাখ্যা করলেন। বললেন, “যদি স্থলপথে যেতে হয়, তাহলে শিয়াদের দেশ ইরানের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। সমুদ্রপথে গেলে ফিরিঙ্গিদের পাল্লায় পড়তে হবে। সেটাও অসম্মানের। কেননা, জাহাজের অঙ্গীকারপত্রে হজরত মরিয়ম ও হজরত ঈসার ছবি ছাপা রয়েছে। সে তো মূর্তি-পূজা। তাই উভয় পথেই যাত্রা হারাম।’

বেচারা মোল্লা সুলতানপুরী কার মুখ বন্ধ করেন? বাদশাহের মুখের ভাব লক্ষ্য করে তাঁর মনে হলো, সংসারের আবহাওয়া বদলে গেছে। মোল্লা আব্দুল্লা সুলতানপুরী ভীষণ লোভী ও পরশ্রীকাতর ছিলেন। অন্য কোনো মোল্লা তাঁর চেয়ে ভালো বলে স্বীকৃত হবে, তাঁর কাছে এমন আশা করাও বৃথা।

অথচ তফাতের মধ্যে মাত্র উনিশ-বিশ। শরীয়ত (মুসলিম ধর্মশাস্ত্র) অনুসারে প্রত্যেক সৎ মুসলমানের বাৎসরিক আয়ের উপর জাকাত° (ধর্মীয় কর অথবা দান) দেওয়া অত্যাবশ্যক কর্তব্য। সেটা থেকে বাঁচার জন্য মোল্লা সুলতানপুরী বৎসরান্তে তাঁর সমস্ত টাকাকড়ির কৌটো (দানপাত্র) স্ত্রীর হাতে তুলে দিতেন এবং পরবর্তী বৎসরের সূচনাতেই আবার তা ফেরত নিতেন। তাঁর নীচতা, তঞ্চকতা, দাম্ভিকতা এবং অত্যাচার জনসাধারণের মধ্যে প্রসিদ্ধ ছিল। সেজন্য দরবারে ও তরুণ সহকর্মীদের মধ্যে মিথ্যা গল্প বানানোর বিশেষ প্রয়োজন হতো না ।

তর্ক-বিতর্কে আবুল ফজলের ক্ষমতা ছিল ভয়ংকর। জিভ চলত কাঁচির মতো। তরুণ বাদশাহ তাঁর পিছনে রয়েছেন, সুতরাং ভয় কিসের? সদর (সর্বোচ্চ বিচারপতি) হউন অথবা কাজী, হাকিমুল্-মুল্‌ক্ (দেশ-দার্শনিক) হউন অথবা মদুমুল্ মুল্ক (দেশপূজ্য), যে-কোনো ব্যক্তির সম্মান তিনি ধূলোয় মিশিয়ে দিতে ইতস্তত করতেন না। সত্তর-বাহাত্তর বছরের বৃদ্ধরা মীর বখ্শীকে (প্রধান লিপিকর) দিয়ে বার্তা পাঠাত—“চিরা বা-মাদার্ মী উত্তী (কেন আমাদের সঙ্গে এমন তামাশা করছ)?” যুবক আবুল ফজল বাদশাহ্ ও বেগুনের গল্প শুনিয়ে দিলেন।

বাদশাহ্ বললেন— “বেগুন খুব ভালো।” পার্শ্বচর তাঁর হাতে হাত মিলিয়ে জানালেন— “সেজন্যই তো খোদা ওর মাথায় ময়ূরকণ্ঠী মুকুট আর গায়ে কেষ্ট ঠাকুরের রং দিয়েছেন।” দ্বিতীয়বার বাদশাহ্ বললেন— “বেগুন খারাপ।”

অমনি পার্শ্বচর মন্তব্য করলেন— “সেজন্যই তো ওর মাথায় কাঁটা ঠুকে দেওয়া হয়েছে।” কোনো একজন জিজ্ঞেস করল— “কেন দুরকম কথা বলছ?” পার্শ্বচর জবাব দিলো— “আমি বাদশাহের চাকর, বেগুনের নয়।” যদিও এই বেগুনের গল্পটা মোল্লা বদায়ূনীর মস্তিষ্ক-প্রসূত। আবুল ফজলকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না, তিনি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করতেন, বাদশাহ্ যে- পথ অবলম্বন করেছেন, তা দেশ ও জাতির কল্যাণের পথ।

মোল্লার উপর অসন্তুষ্ট হয়ে আকবর একজন নতুন মোল্লা শেখ আব্দুন্ নবীর কাছে ভালো-কিছু আশা করে তাঁকে সদর (সর্বোচ্চ মোল্লা) পদ প্রদান করলেন । আব্দুন্ নবীর এই পদোন্নতি দেখে মোল্লা সুলতানপুরী কি নিশ্চিন্তে নিশ্বাস নিতে পারেন? তিনি একখানি পুস্তিকায় আব্দুন্ নবীকে অপরাধে অভিযুক্ত করে লিখলেন— “তিনি খিজির শিরওয়ানীর উপর পয়গম্বরকে নিন্দামন্দ করার এবং মীর হবাশের উপর শি সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়ার মিথ্যা অভিযোগ এনে তাঁদের অন্যায়ভাবে হত্যা করিয়েছেন এরূপ ব্যক্তির পিছনে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া অবৈধ।

তিনি রক্ত-অর্শেও রোগাক্রা সেজন্য তিনি নামাজে ইমামº হতে পারেন না।” আব্দুন্ নবীও ইটের জবাব পাটকে দিলেন। দুই মোল্লার চাপান-উতোর শুরু হলো। নতুন নতুন কথাবার্তা নিয়ে দুজে মধ্যে ঝগড়া চলতে লাগল। সেটা ছিল দুই বিষধরের ঝাপটা-ঝাপটি। তাতে বাদশাহ্ ও সহায়কবৃন্দ কেবল যে কৌতুক বোধ করছিলেন তাই না, আকবরের উপর শরীয়তের যে এক-আধটু প্রভাব ছিল, তা-ও শেষ হয়ে গেল। উপলব্ধি করলেন, কারো উক্তিকে প্রমাণরূপে গ্রহণ করে চলা নির্বুদ্ধিতা।

তখন শেখ মুবারকের যুগ ছিল। বাদশাহ্ মোল্লার অন্ধবিশ্বাসের কথা উল্লেখ করলে তিনি বললেন— ওঁকে নিয়ে চিন্তা করছেন কেন? যেখানে মতভেদ দেখা দেয়, সেখানে বাদশাহের মতামতই চূড়ান্ত হিসাবে গ্রহণযোগ্য। শেখ মুবারক একখানি সংক্ষিপ্ত অথচ খুব তাৎপর্যপূর্ণ ব্যবস্থাপত্র রচনা করলেন।

সমস্ত মোল্লাকে দরবারে ডেকে পাঠানো হলো এবং তাদের প্রত্যেককে সেই ব্যবস্থাপত্রে নিজের নিজের সীলমোহরের ছাপ দিতে বলা হলো। মোল্লা সুলতানপুরী সীলমোহরের ছাপ দিলেন, আব্দুন্ নবীও মোহরাঙ্কিত করলেন, অন্যসব মোল্লারা তা করতে বাধ্য হলেন। শরীয়তের তীর হাত থেকে ফস্কে গেল, বাদশাহ্ ধর্মসংক্রান্ত বিষয়ে তাঁদের কোনো কথা জিজ্ঞাসা করারও প্রয়োজন বোধ করলেন না। যদি প্রয়োজন বোধ করে থাকেন তাহলে এটাই, ডেকে এনে তাঁদের দিয়ে শাস্ত্রার্থ কর্দমাক্ত করানো।

ক্রন্দনোন্মুখ মার্জারের মতো আব্দুল্লা সুলতানপুরী ফতোয়া দিলেন— “ভারত বিধর্মীদের রাজ্য হয়ে গেছে। এখানে থাকাই উচিত নয়।” এই বলে তিনি আকবরের রাজ্য ত্যাগ করে খোদার মসজিদ গৃহে আশ্রয় গ্রহণ করলেন। সেখান থেকেই তীর – নিক্ষেপ করতে লাগলেন। কখনো বলেন- আকবর শিয়া হয়ে গেছেন, কখনো বলেন— হিন্দু হয়ে গেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। বাদশাহ্ বললেন— “মসজিদ কি আমার সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত নয়?” বস্তুত মোল্লার কথাবার্তা নিতান্তই গালমন্দ ব্যতীত কিছুই ছিল না।

আকবর কখনোই চরম দণ্ড দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন না। যখন তিনি বালক মাত্র, তখনই শত্রু হেমুকে বন্দী করে তাঁর সম্মুখে উপস্থিত করা হয়েছিল, বৈরাম খা তাঁকে স্বহস্তে নিধন করে আকবরকে গাজী উপাধি গ্রহণ করতে বলেছিলেন, কিন্তু তাতে তিনি অসম্মত হয়েছিলেন। মোল্লা সুলতানপুরী এবং মোল্লা আব্দুন নবীর নানা কথাবার্তা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রয়াস আকবরের কর্ণগোচর হচ্ছিল। তিনি তাঁদের উভয়কে ১৫৭৯- ৮০ খ্রিস্টাব্দে (হিজরী ৯৮৭ সন) খোদার প্রকৃত গৃহ মক্কায় পাঠিয়ে দিয়েছিলেন এবং নির্দেশ দিয়েছিলেন, বিনা হুকুমে তাঁরা যেন সেখান থেকে প্রত্যাবর্তন না করেন ।

ভারতের দুই সৈয়দ আলিম মক্কায় পৌঁছলেন। সেখানকার একজন মহাপণ্ডিত শেখ ইবন্ হজর মক্কী তাঁদের অত্যন্ত প্রীতি ও সম্মান প্রদর্শন করেন। যদিও তখন কাবার দ্বার উন্মুক্ত থাকার সময় নয়, তা সত্ত্বেও তিনি কাবাগৃহের দ্বার উন্মুক্ত করিয়ে মোল্লা সুলতানপুরীকে কাবা দর্শন করান।

কিন্তু সেখানে ভারতের সেই ভোগ-বিলাস কোথায়? হুমায়ূন, শেরশাহের শাসনকালে এবং আকবরের শাসনকালের অর্ধাংশ ব্যাপী যে রাজকীয় জীবনযাত্রা নির্বাহ করেছেন, সেসব স্মরণে আসতে থাকে। আসরে বসে বসে কয়েকদিন আকবরকে বিধর্মী বলে শাপ-শাপান্ত করলেন, তাতে কি বিগত কাল বিস্তৃত হওয়া যায়? কঠোর অধ্যবসায়ে যে আরবি ভাষা আয়ত্ত করেছিলেন, তা সেখানকার শিশুদের মাতৃভাষা। ইসলাম ধর্মের বিষয়ে আরবের মানুষ এই ভারতীয়দের কোন ক্ষেতের মূলো বিবেচনা

 

মোল্লা আব্দুল্লা সুলতানপুরীর অবসান | মোল্লা আব্দুল্লা সুলতানপুরী | আকবর

 

করবে? অসহায় ছটফট করে সময় কাটাতে লাগলেন। তারপর, আজাদের বর্ণনা অনুসারে— “এই ভার মক্কার মাটি বহন করতে পারল না, মদীনার মাটিও না। যেখানকার পাথর সেখানেই এসে পড়ল।” কাবুলের রাজ্যপাল আকবরের সৎ-ভ্রাতা মুহম্মদ হাকিম মির্জা বিদ্রোহী হয়ে উঠলেন ।

তিনি ভারতের সিংহাসন দখল করার জন্য পাঞ্জাব অভিমুখে ধাবিত হলেন। আকবরের এক বিখ্যাত সেনাপতি খানেজমান পূর্বদিকের সুবাগুলিতে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বসলেন। যখন সেই সংবাদ মক্কায় দুই মোল্লার কানে গিয়ে পৌছল, তখন তাঁরা ভাবলেন : এবার আকবরের দিন ঘনিয়ে এসেছে, বিধর্মিতাই তাঁর মূলোৎপাটন করল। আমাদের একটুখানি হাত লাগানো যা দেরি, পুরো ইমারত হুড়মুড় করে ভেঙে পড়বে ।

আকবরের পিতৃসা গুলবদন বেগম, সেলিমা সুলতান বেগম ও অন্যান্য বেগমেরা হজ সম্পূর্ণ করে ভারতে প্রত্যাবর্তন করছিলেন। তাঁদের সঙ্গে মোল্লা সুলতানপুরীও আসেন। গুজরাতের সম্ভাত বন্দরে অবতরণ করে খোঁজ-খবর নিলেন। হাকিম মির্জার ব্যাপার ইতোমধ্যেই ঢুকে-বুকে গেছে।

তাই শুনে মোল্লা ভয়ে আশঙ্কায় আক্ষেপ করছিলেন। বেগমদের দিয়ে সুপারিশ করালেন দরবারে। যতই হোক, বেগমেরা কিন্তু আকবরের মতো শরীয়তকে ছোট নজরে দেখতেন না। মোল্লারা মক্কায় বসে যে-সব মন্তব্য করেছেন, সব খবরই আকবরের কাছে এসে পৌছেছিল।

তিনি কি মহিলাদের সুপারিশ মানেন? গুজরাতের শাসনকর্তার কাছে হুকুম এল— মোল্লাকে বন্দী করে গুজরাতেই আটকে রাখো এবং গোপনে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে দরবারে পাঠাও। খবর শুনেই ভয়ে মোল্লার প্রাণ উড়ে গেল। তিনি দরবার অভিমুখে রওনা দেবেন কি, তার আগেই আল্লার ডাক এসে পৌছল এবং ১৫৮২ খ্রিস্টাব্দে মোল্লা সুলতানপুরী প্রাণত্যাগ করলেন লোকে বলত, বাদশাহের আদেশেই কেউ তাঁকে বিষপ্রয়োগ করেছিল ।

যথার্থই— “ি দারুণ নগদা-নগদি কারবার, এক হাতে দেবে অন্য হাতে নেবে।” নিরপরাধ সন্ত শে আল্লাঈকে এই শয়তান হত্যা করিয়েছিলেন, তেমনই তিনি নিজেও লাঞ্ছনার পাত্র হা মৃত্যুমুখে পতিত হলেন । পরে তাঁর লাশ জলন্ধরে নিয়ে গিয়ে কবরস্থ করা হয় ।

 

মোল্লা আব্দুল্লা সুলতানপুরীর অবসান | মোল্লা আব্দুল্লা সুলতানপুরী | আকবর

 

লাহৌরে মোল্লা সুলতানপুরীর বহু সম্পত্তি ও প্রাসাদোপম অট্টালিকা ছি গৃহাভ্যন্তরে বড় বড় সমাধি ছিল। সেগুলো আকারে এমন লম্বা-চওড়া ছিল সেগুলিকে মোল্লার মহান পূর্বপুরুষদের প্রভাব-প্রতিপত্তির নিদর্শন বলে প্রচার ব হতো। সবুজ চাদরে ঢাকা থাকত কবরগুলো। পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের দিনের আলো থাকতেই সেগুলিতে প্রদীপ জ্বালিয়ে দেওয়া হতো।

সমাধির উপর স থাকত টাটকা ফুল। কোনো একজন প্রচার করে যে কবরগুলো নাকি কৃত্রিম, লে দেখানো, বস্তুত সেগুলোর মধ্যে লুকানো রয়েছে ধন-সম্পদ। রাজধানী ফতেহ সিক্রী থেকে গাজী আলিকে লাহৌরে প্রেরণ করা হলো। বাস্তবিকই সেই কবরগু ভিতর থেকে এত ধনরত্ন উদ্ধার হলো যে অনুমান করা দুঃসাধ্য। কয়েকটি সিন্দুক সোনার ইটে ভর্তি ছিল। নগদ তিন কোটি টাকা বেরুলো। সমস্ত সম্পদ কোষাগারে জমা পড়ল । মোল্লার পুত্রকে বড় ঘরের হাওয়া খেতে হয় কিছুদিন ।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment