প্রশাসনিক ক্ষেত্র

প্রশাসনিক ক্ষেত্র – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “আকবর” বিষয়ের “শাসনব্যবস্থা” বিভাগের একটি পাঠ। শাসনব্যবস্থার বহু বিষয়ই আকবর তাঁর পূর্ববর্তী বাদশাহদের, বিশেষ করে শেরশাহের নিকট থেকে গ্রহণ করেছিলেন। মুসলমান বাদশাহদের মধ্যে আলাউদ্দীন খিলজী অনেক ব্যাপারেই আকবরের সমকক্ষ ছিলেন, যদিও ধর্মীয় উদারতা প্রদর্শন করে নিজের সিংহাসনকে বিপদে ফেলতে চাননি। আকবর প্রথম থেকেই অনেক কিছু পেয়ে গিয়েছিলেন, তিনি সেগুলির আরও বিকাশসাধন করেন।

প্রশাসনিক ক্ষেত্র

 

 

তিনি তাঁর সাম্রাজ্যকে প্রথমে বারোটি ও শেষে পনেরোটি সুবায় (প্রদেশে) বিভক্ত করেন। সেগুলি হল—

 

প্রশাসনিক ক্ষেত্র | শাসনব্যবস্থা | আকবর

 

জৌনপুর শর্কি (পূর্ব) রাজ্যের রাজধানী ছিল । আকবরের আমলে জৌনপুরের বদলে ইলাহাবাদ সুবা ও রাজধানী হয় । আকবর ও তাঁর আস্থাভাজন সহায়কদের জীবনী পাঠ করলে জানা যাবে, আকবর নিজের দেশ ও রাষ্ট্রের জন্য অনেক দূর পর্যন্ত চিন্তাভাবনা করতেন। তিনি তাঁর কাজকর্মের সুফলকে নিজের কালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চাইতেন না।

তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, ভারতকে এক রাষ্ট্র এক জাতিতে পরিণত করার যে প্রয়াস, সমস্ত বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও তিনি যা করছেন, তা নিরর্থক হয়ে যাবে না। নিরর্থক হয়ে গেছে— এ কথা আমরা বলতে পারিনে, যদিও আমাদের দেশ তা থেকে যতটা উপকার লাভ করতে পারত, ততটা উপকার গ্রহণ করতে সমর্থ হয়নি। যদি সমর্থ হতো, তাহলে আমাদের তিন শত বিয়াল্লিশ বছরের কালরাত্রি অতিবাহিত করতে হতো না, দেশ দ্বিখণ্ডিত ও হতো না। 

 

প্রশাসনিক ক্ষেত্র | শাসনব্যবস্থা | আকবর

 

প্রত্যেক সুবায় কয়েকটি সরকার থাকত, পরবর্তীকালে সেগুলিকে জেরা বলা হতে থাকে । কয়েকটি পরগণা নিয়ে হতো একটি সরকার। আগরা সুবায় ১৩টি সরকার এবং ২০৩টি পরগণা ছিল, আগরা সরকারে ছিল ৩১টি পরগণা, তার ক্ষেত্রফল ছিল ১৮৬৪ বর্গমাইল । পরগণাগুলি আজও প্রায় একই আছে, কোথাও কোথাও সরকারের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে । উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সুবা বিহারের সারন সরকারকে ইংরেজ আমলে ভেঙে চম্পারন ও সারন— দুইটি জেলায় বিভক্ত করে দেওয়া হয়। জেলার গেজেটিয়ারে সরকার ও পরগণাগুলি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।

 

কাশ্মীর বিজয় | পশ্চিমোত্তরের সংগ্রাম | আকবর

 

পরগণায় এক বা একাধিক মহাল থাকত । রাজস্ব করোড় দাম (আড়াই লক্ষ টাকা) হওয়ায় সেগুলিকে করোড়ী-মহালও বলা হতো আর সেগুলির অমাত্যদের বলা হতো করোড়ী অথবা আমিল । আমিলদের নাম ও তাদের অত্যাচারের কাহিনী বর্তমান শতাব্দীর গোড়ার দিকেও বয়োবৃদ্ধদের মুখে মুখে ছিল। আমরা পূর্বে এ কথাও উল্লেখ করেছি যে করোড়ীদের অত্যাচার নিবারণের জন্য টোডরমলকে কঠোর ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হয় ।

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment