মনসব চেঙ্গিসের সময়ের – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “আকবর” বিষয়ের “শাসনব্যবস্থা” বিভাগের একটি পাঠ। মনসব (পদ) চেঙ্গিসের সময় কিংবা তারও আগে থেকে চলে আসছিল । চেঙ্গিসের সেনা দশকী, শতকী, হাজারী ও দশহাজারী (তুমান)-তে বিভক্ত ছিল। আকবরের আমলে শাহজাদা ব্যতীত কাউকে পাঁচহাজারীর উপরে মনসব দেওয়া হতো না, ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল রাজা মানসিংহ, তাঁকে আকবর হপ্ত-হাজারী (সাতহাজারী) মনসব প্রদান করেছিলেন।
মনসব চেঙ্গিসের সময়
আমরা আগেই বলে এসেছি যে আকবর সলীমকে দওয়াজ্দহ্-হাজারী (বারোহাজারী), মুবারককে দশহাজারী এবং দানিয়ালকে হত্-হাজারী মনসব দিয়েছিলেন। মনসব ছিল সামরিক পদ, সেজন্য প্রত্যেক মনসবদারকে নির্দিষ্ট সংখ্যক ঘোড়া, হাতি, মাল-পরিবহনের জন্য পশু, সৈন্য রাখতে হতো। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় শ্রেণীর মনসব অনুসারে বেতন দেওয়া হতো। ‘আইন-আকবরী’-তে নিম্নলিখিতভাবে বর্ণিত হয়েছে—
ঘোড়া ও হাতি ছিল বিভিন্ন শ্রেণীর । ঘোড়া ইরাকী, মজনিসী, তুর্কি, ইয়াবু, তাজি ও জংলী— এই ছয় শ্রেণীতে বিভক্ত ছিল। সওয়ারদের বেতন হতো ঘোড়ার শ্রেণী অনুসারে। ইরাকীকে প্রতি মাসে দেওয়া হতো ৩০ টাকা, মজনিসীকে ২৫ টাকা, তুর্কিকে ২০ টাকা, ইয়াবুকে ১৮ টাকা, তাজিকে ১৫ টাকা এবং জংলীকে ১১ টাকা। হাতি ছিল পাঁচ শ্রেণীর ।
রাজ্য শাসনের জন্য আকবর আমলাতন্ত্র চালু করেন এবং প্রদেশগুলোকে স্বায়ত্বশাসন দান করেন। আকবরের আমলাতন্ত্র বিশ্বের সবথেকে ফলপ্রসূ আমলাতন্ত্রের মধ্যে অন্যতম। তিনি প্রত্যেক অঞ্চলে সামরিক শাসক নিয়োগ দেন। প্রত্যেক শাসক স্বশাসিত প্রদেশের সেনাবাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন।

ভারবাহী তিন প্রকারের— উট, খচ্চর ও গরুর গাড়ি। পদাতিক সৈন্যদের বেতন ছিল মাসে সাড়ে ১১ টাকা, ১০ টাকা ও ৮ টাকা হারে । সওয়ারদের মধ্যে যেখানে ইরানী ও তুরানী জওয়ানেরা মাইনে পেত ২৫ টাকা হারে, সেখানে হিন্দীভাষী সৈন্য পেত ২০ টাকা ও খালসা সৈন্য পেত ১৫ টাকা হারে। মনসবদারেরা মোট ৬৬ ভাগে বিভক্ত ছিল । আইন মোতাবেক সৈন্য ছাড়াও অতিরিক্ত সৈন্য থাকত। দাগদার বলে কথিত দাগ- দেওয়া ঘোড়ার মালিক মনসবদারদের সম্মান ছিল বেশি। বাদশাহকে দর্শন করার সময় সমস্ত মনসবদারকে নজরানা দিতে হতো, তা ছিল নিম্নরূপ—
আরও দেখুনঃ