রহীম শাসক , মুজফ্ফর শাহ গুজরাতী অধীনতা স্বীকার করে একটা ছোটখাটো জায়গির পেয়েছিলেন। ১৫৭১ খ্রিস্টাব্দে তিনি বিদ্রোহ করে পালিয়ে যান এবং ১৫৮৩ খ্রিস্টাব্দে পর্যন্ত জুনাগড়ে থাকেন। শাহাবুদ্দীনের বহুসংখ্যক অনুগত লোক অসন্তুষ্ট হয়ে চলে গিয়ে মুজফ্ফরশাহের সঙ্গে যোগ দিলেন। তিনি প্রকাশ্য বিদ্রোহ শুরু করেন, আট বছর পর্যন্ত তা চলেছিল ।
রহীম শাসক | গুজরাত বিজয় | আকবর
১৫৮৩ খ্রিস্টাব্দে শাহাবুদ্দীনের জায়গায় গুজরাতের উপরাজ নিযুক্ত করা হল এতমাদ খাঁকে। ঐতিহাসিক নিজামুদ্দীন আহমদের মতো একজন যোগ্য বখ্শী পেয়েছিলেন এতমাদ। সমস্ত বন্দোবস্ত সত্ত্বেও ১৫৮৩ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে মুজফ্ফরশাহ আহমদাবাদে প্রবেশ-পূর্বক শাহ উপাধি ধারণ করে গুজরাতের বাদশাহ হয়ে বসেন।
রাজ্য শাসনের জন্য আকবর আমলাতন্ত্র চালু করেন এবং প্রদেশগুলোকে স্বায়ত্বশাসন দান করেন। আকবরের আমলাতন্ত্র বিশ্বের সবথেকে ফলপ্রসূ আমলাতন্ত্রের মধ্যে অন্যতম। তিনি প্রত্যেক অঞ্চলে সামরিক শাসক নিয়োগ দেন। প্রত্যেক শাসক স্বশাসিত প্রদেশের সেনাবাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন। সম্রাট আকবর শাসিত সাম্রাজ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের শাস্তি ছিল একমাত্র মৃত্যুদন্ড।
তিনি প্রতারণা করে ভড়ৌচে আত্মসমর্পণকারী শাহী অমাত্য কুতুবুদ্দীনকে হত্যা করেন। ইলাহাবাদে সেই সংবাদ পেয়ে আকবর তাড়াতাড়ি ১৫৮৫ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারিতে আগরায় ফিরে আসেন— তখন ফতেহপুর-সিক্রী রাজধানী ছিল না। আকবর বৈরামপুত্র আব্দুর রহীম— যাঁকে তিনি সস্নেহে মির্জা খান বলতেন— তাঁকে গুজরাতের উপরাজ নিযুক্ত করলেন।
রহীম স্বল্প-সংখ্যক সৈন্য নিয়ে শত্রুকে ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারিতে, প্রথমে আহমদাবাদের নিকটে সরখেজে, তারপর নাডৌরে (রাজপিপলা) পরাজিত করেন। মুজফ্ফরশাহ পালিয়ে বেড়াতে থাকেন। কচ্ছে নিজামুদ্দীন তাঁকে চরম পরাজিত করে তাঁর আশ্রদানকারী রাজার দুই তিন শত গ্রাম ধ্বংস করে দেন।
এই খবর পেতেই আকবর নিজামুদ্দীনকে দিল্লীতে ফিরিয়ে আনেন। মুজফ্ফরশাহ কাঠিয়াওয়াড় ও কচ্ছে ১৫৯১-৯২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাদশাহী সেনাকে হয়রান করতে থাকেন। ধরা পড়ার পর নিজের মুণ্ড কেটে আত্মহত্যা করেন তিনি । রহীম সারা গুজরাতে শান্তি-ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেন। এই সাফল্যের জন্য তিনি ‘খানখানা’ উপাধি লাভ করেন ।
আরও দেখুনঃ