আকবরের ভূমি রাজস্ব

আকবরের ভূমি রাজস্ব, রাজ্যের আয়ের জন্য আরও অনেক কর ছিল, কিন্তু সবচেয়ে বেশি আয় হতো ভূমি-রাজস্ব থেকে । আকবর জিজিয়া ও তীর্থকর তুলে দিয়েছিলেন, সে-কথা পূর্বে উল্লেখ করেছি। আকবরের মৃত্যু ও জাহাঙ্গিরের সিংহাসনে আরোহণের বছর (১৬০৫ খ্রিঃ) সাম্রাজ্যের আয় ছিল ১৭ কোটি ৪৫ লক্ষ দাম অর্থাৎ ৪ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা ।

আকবরের ভূমি রাজস্ব

আকবরের ভূমি রাজস্ব  | শাসনব্যবস্থা | আকবর

 

দ্রব্যমূল্যের নিরিখে আকবরের টাকার মূল্য নিম্নলিখিত তালিকা থেকে বোঝা যাবে । (আকবরী মণ ছিল সাড়ে ৫৫ পাউণ্ড = ২৬ সের । আজকাল মণ হয় ৮২ পাউণ্ডে। আকবরী সের এখনকার সেরের দুই-তৃতীয়াংশ ছিল অর্থাৎ সাড়ে ১০ ছটাক।) আমাদের মণ আকবরী মণের প্রায় দেড় গুণ অর্থাৎ ১.৪৭ মণ অথবা ৫৯.১৮ সের, সেই হিসেবে এখনকার (আগস্ট, ১৯৫৬ খ্রিঃ) মণ-প্রতি বাজার-মূল্যের সঙ্গে তুলনা করুন—

 

আকবরের ভূমি রাজস্ব  | শাসনব্যবস্থা | আকবর

 

এ থেকেই বোঝা যায়, আকবরের আমল থেকে বর্তমানে জিনিসপত্রের দাম কত বেড়ে গেছে, অর্থাৎ টাকার ক্রয়মূল্যের ক্ষমতা কত কমে গেছে। অন্যান্য খাদ্যবস্তুর মধ্যে মেষ-পাঁঠার মাংস এখনকার সের হিসেবে পৌনে চার পয়সা প্রতি সের বিক্রি হতো, যদিও আজকাল তা দেড় টাকা থেকে আড়াই টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হয় । দুধ প্রায় দেড় পয়সা সের দরে পাওয়া যেত, বর্তমানে তা আট আনা থেকে এক টাকা প্রতি সের।

 

আকবরের ভূমি রাজস্ব  | শাসনব্যবস্থা | আকবর

 

সাধারণ শ্রমিকের মজুরি ছিল প্রতিদিন ২ দাম (প্রায় সওয়া তিন পয়সা) এবং কারিগরের ৭ দাম (প্রায় ১০ পয়সা)। সেই হিসেবে সৈন্যদের ও সেনাবাহিনীর উচ্চ পদাধিকারীদের বেতন ছিল যথেষ্ট বেশি। তাদের তুলনায় শ্রমিক ও কারিগর মজুরি কম পেত। তা সত্ত্বেও শ্রমিক তা রোজকার মজুরি দিয়ে ৫ সের গম কিনতে পারত। একদিনের মজুরিতে জোয়ার পাওয়া যেত ৮ সের, যব কিনতে পারত ৭ সের। কারিগর একদিনের মজুরিতে যব কিনতে পারত ২৫ সের।

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment