আকবরের প্রারম্ভিক জীবন , জালালুদ্দিন মুহাম্মদ আকবর ভারতবর্ষের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক। পৃথিবীর ইতিহাস এ মহান শাসকদের অন্যতম মহামতি আকবর নামেও পরিচিত। তিনি মুঘল সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট।
আকবরের প্রারম্ভিক জীবন | প্রারম্ভিক জীবন | আকবর
পিতা সম্রাট হুমায়ুনের মৃত্যুর পর ১৫৫৬ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে আকবর ভারতের শাসনভার গ্রহণ করেন। বৈরাম খানের তত্ত্বাবধানে তিনি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্রাজ্য বিস্তার করতে থাকেন। ১৫৬০ সালে বৈরাম খাঁকে সরিয়ে আকবর নিজে সকল ক্ষমতা দখল করেন। কিন্তু আকবর ভারতবর্ষ ও আফগানিস্তানে তার সাম্রাজ্য বিস্তার চালিয়ে যান। ১৬০৫ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রায় সমস্ত উত্তর ভারত তার সাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে। আকবরের মৃত্যুর পর তার পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীর ভারতবর্ষের শাসনভার গ্রহণ করেন ও সাম্রাজ্য বিস্তারে মনোনিবেশ করেন।
বাবর (তুর্কি উচ্চারণ বাবুর) ভারতে তাঁর বংশকে মোগল (মঙ্গোল) বংশ নামে প্রসিদ্ধ করেছিলেন, তবে, প্রকৃতপক্ষে তিনি মোগল ছিলেন না, ছিলেন তুর্কি— বিরলস। তাঁর মাতা কুতুলুগ নিগার খানম মোগলিস্তানের খান ইউনসের (১৪৬৮-৮৭ খ্রিঃ) কন্যা ছিলেন, সেজন্য মাতৃপক্ষ থেকে অবশ্যই তাঁর ধমনীতে ছিল চেঙ্গিসের রক্ত। আকবরের মাতা হামিদা বানু ছিলেন ইরানী। সেদিক থেকে তাঁর শরীরে ছিল ইরানী রক্ত।
বাবর কেন ভারতে নিজেকে মোগল নামে প্রসিদ্ধ করেছিলেন? সম্ভবত তারা প্রয়াস শুরু হয়েছিল কাবুলেই, যে-কাবুল ছেড়ে আসা কঠিন ছিল। কিন্তু কাবুলীরা বাবরের জন্মভূমি তুরান (আধুনিক সোবিয়েত মধ্য-এশিয়া) সম্পর্কে ভালোভাবেই পরিচিত ছিল। মধ্য-এশিয়ায় চেঙ্গিস রক্ত-সম্পর্ককে বহুকাল পর্যন্ত অত্যন্ত পবিত্র বলে গণ্য করা হতো।
সেজন্য সেখানকার মানুষ খুঁজে-পেতে চেঙ্গিস বংশের কোনো পুরুষকে নিয়ে এসে নিজেদের খান (রাজা) করতেন। তৈমূর সর্বময় প্রভুত্বকারী বিজেতা ছিলেন। তাঁর খান-সিংহাসনে আরোহণ করার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়া সম্ভব ছিল না, কিন্তু তৈমূর সমরকন্দের সিংহাসনে চেঙ্গিস-বংশীয় পুতুল-খানকে রেখে, নিজে আমি হয়েই থেকেছিলেন।
তাঁর প্রপৌত্র আবু সঈদ পর্যন্ত চেঙ্গিসীয় পুতুলখানের ধারা বজায় রেখেছিলেন। তৈমূর নিজের জন্য স্রেফ ‘আমির’ ব্যবহার করতেন । তেমূর যখন আমির ছিলেন, তখন এই শব্দটার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে না কেন? তৈমূরী শাহজাদাদের আমিরজাদা— সংক্ষেপে মির্জা— বলা হতো ।
আরও দেখুনঃ