মোল্লা বদায়নীর মৃত্যু, ৯৯৯ হিজরীতে (১৫৯০-৯১ খ্রিস্টাব্দে) মোল্লা অসুস্থ হয়ে বদায়ূন গেলেন। বিসাওয়র থেকে পরিবারকেও সেখানে নিয়ে এলেন। দরবারে উপস্থিত হওয়ার জন্য হুকুম আসতে লাগল। আকবর তখন কাশ্মীরের উদ্দেশে যাত্রাকালে ভিনওয়ারে অবস্থান করছিলেন। সেখানেই হাজির হলেন তিনি। বাদশাহ জিজ্ঞাসা করলেন— “কতদিন পরে এলেন?” মোল্লা জবাব দিলেন— “পাচ মাস পরে।” জানতেন, খুব থাকবেন, তাই বদায়ূনের অমাত্যদের ও হাকিম অয়নুল-মুকের প্রমাণপত্র সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। আকবর সমস্ত পাঠ করালেন, তবু বললেন— “পাঁচ মাস ধরে অসুখ হয় না।” মোল্লা কুর্নিশ জানানোর অনুমতি পেলেন না ।
মোল্লা বদায়নীর মৃত্যু | মোল্লা বদায়নী | আকবর
ফৈজীও সুপারিশপত্র লিখে দিয়েছিলেন, অন্য বন্ধু-বান্ধবও চেষ্টা করেছিলেন। পাঁচ মাস বাদে বাদশাহ কাশ্মীর থেকে লাহৌরে প্রত্যাবর্তন করার পরই মোল্লার প্রতি সদয় হলেন । মোল্লার বন্ধুরা একের পর এক ইহলোক ত্যাগ করে চলে যাচ্ছিলেন। সেজন্য তাঁর মনে দারুণ দুঃখ ছিলই । লিখেছেন—
ইয়ারা হমাঁ রান্দ্ ওয়া দরে-কাবা গিরতাদ ।
মা সু-কদম বর্-দরে-খুমার ব-মাঁদীম্ । আজ নুকতয়ে-মকসূদ্ ন শুদ্ ফাহমে-হাদীসে ।
লা দীন ওয়া লা-দুনিয়া বেকার ব-মাঁদীম্।
(সকল বন্ধু চলে গেল, তারা গিয়ে কাবার দরজা স্পর্শ করেছে। আমি অশক্ত পায়ে শরাবখানার দরজায় পড়ে রয়েছি। হাদীস-তত্ত্বের কোনো কথাই শিখিনি। ধর্মহীন সংসারহীন আমি অনর্থক পড়ে রয়েছি।) দরবারে অধর্মের ধুম চলছিল। লোকে ঝপাঝপ ‘দীন-ইলাহী’-তে ঢুকে পড়ছিল, দাড়ি-টাড়ি সাফ হয়ে যাচ্ছিল। তাঁদের মধ্যে আবার কয়েকজন আলিম ছিলেন, যাঁরা নিজেদের অদ্বিতীয় পণ্ডিত মনে করতেন। অভিজাত শেখদের চোগা-চাপকান পরা কয়েকজন বলতেন : আমরা হজরত গওসের পুত্র।
আমাদের শেখ হুকুম দিয়েছেন, ভারতবর্ষের বাদশাহের দুর্বলতা দেখা দিয়েছে, তোমরা গিয়ে তাঁকে রক্ষা করো। এখানে এসেই তাঁরা দাড়ি মুড়িয়ে ফেললেন। ১৫৯৫ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই অক্টোবর ফৈজী দেহত্যাগ করেন। তাঁর উপর আঘাত হানতে মোল্লার কলম কখনও ক্লান্ত হয়নি। পরদিন হাকিম হামামও চলে যান।
১৫৯৬ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে ফেব্রুয়ারি মোল্লা তাঁর ‘মুন্তখিবুত্-তওয়ারিখ’ লেখার কাজ সম্পন্ন করেন। পূর্বেই যা উল্লেখ করেছি, আকবর ও তাঁর সহমত-পোষণকারীদের বিরুদ্ধে মোল্লা নির্মম লেখনী তুলে নিয়েছিলেন হাতে, সেই কারণে গ্রন্থটি যাতে সম্ভাব্য সঙ্কটের মধ্যে না পড়ে এবং সুরক্ষিত অবস্থায় পরবর্তী প্রজন্মের হাতে গিয়ে পৌছায়, তার বন্দোবস্ত করেছিলেন।
সাতান্ন বছর বয়সে বদায়ূনে মোল্লার মৃত্যু হয়। সন্নিকটস্থ আতাপুরের আম্রকাননে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। হতে পারে, তখনকার দিনে আতাপুর শহরের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তবে বর্তমানে দূরে সরে গেছে। আজাদ লিখেছেন— “সেখানে একটি ক্ষেতে তিন-চারটি কবর আছে, তার উপর তিন-চারটি আমের গাছ আছে।
সেটাকে মোল্লার বাগান বলা হয়। লোকে বলে, ওই কবরগুলোর মধ্যে মোল্লা সাহেবেরও কবর আছে । আতাপুর ও বাগে-অম্বার (আম্রকাননের) কেউ নামও জানে না। যে-মহল্লায় তাঁর বাসভবন ছিল, সেখানে এখনও তিনি লোকের মুখে মুখে রয়েছেন। বলা হয় পতঙ্গী- টিলা, সৈয়দওয়াড়ায়।” লোকজনের মুখে শোনা যায়, তাঁর সন্তানদের মধ্যে এক কন্যা জীবিত ছিলেন,
বর্তমানে তাঁর সন্তান-সন্ততি রয়েছে সীতাপুর জেলার খয়রাবাদে। ৯৯৯ হিজরীতে (১৫৯০-৯১ খ্রিস্টাব্দে) মোল্লা অসুস্থ হয়ে বদায়ূন গেলেন। বিসাওয়র থেকে পরিবারকেও সেখানে নিয়ে এলেন। দরবারে উপস্থিত হওয়ার জন্য হুকুম আসতে লাগল। আকবর তখন কাশ্মীরের উদ্দেশে যাত্রাকালে ভিনওয়ারে অবস্থান করছিলেন। সেখানেই হাজির হলেন তিনি।
বাদশাহ জিজ্ঞাসা করলেন— “কতদিন পরে এলেন?” মোল্লা জবাব দিলেন— “পাচ মাস পরে।” জানতেন, খুব থাকবেন, তাই বদায়ূনের অমাত্যদের ও হাকিম অয়নুল-মুকের প্রমাণপত্র সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। আকবর সমস্ত পাঠ করালেন, তবু বললেন— “পাঁচ মাস ধরে অসুখ হয় না।” মোল্লা কুর্নিশ জানানোর অনুমতি পেলেন না ।
ফৈজীও সুপারিশপত্র লিখে দিয়েছিলেন, অন্য বন্ধু-বান্ধবও চেষ্টা করেছিলেন। পাঁচ মাস বাদে বাদশাহ কাশ্মীর থেকে লাহৌরে প্রত্যাবর্তন করার পরই মোল্লার প্রতি সদয় হলেন । মোল্লার বন্ধুরা একের পর এক ইহলোক ত্যাগ করে চলে যাচ্ছিলেন। সেজন্য তাঁর মনে দারুণ দুঃখ ছিলই । লিখেছেন—
(সকল বন্ধু চলে গেল, তারা গিয়ে কাবার দরজা স্পর্শ করেছে। আমি অশক্ত পায়ে শরাবখানার দরজায় পড়ে রয়েছি। হাদীস-তত্ত্বের কোনো কথাই শিখিনি। ধর্মহীন সংসারহীন আমি অনর্থক পড়ে রয়েছি।) দরবারে অধর্মের ধুম চলছিল। লোকে ঝপাঝপ ‘দীন-ইলাহী’-তে ঢুকে পড়ছিল, দাড়ি-টাড়ি সাফ হয়ে যাচ্ছিল।
তাঁদের মধ্যে আবার কয়েকজন আলিম ছিলেন, যাঁরা নিজেদের অদ্বিতীয় পণ্ডিত মনে করতেন। অভিজাত শেখদের চোগা-চাপকান পরা কয়েকজন বলতেন : আমরা হজরত গওসের পুত্র। আমাদের শেখ হুকুম দিয়েছেন, ভারতবর্ষের বাদশাহের দুর্বলতা দেখা দিয়েছে, তোমরা গিয়ে তাঁকে রক্ষা করো। এখানে এসেই তাঁরা দাড়ি মুড়িয়ে ফেললেন। ১৫৯৫ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই অক্টোবর ফৈজী দেহত্যাগ করেন। তাঁর উপর আঘাত হানতে মোল্লার কলম কখনও ক্লান্ত হয়নি। পরদিন হাকিম হামামও চলে যান।
১৫৯৬ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে ফেব্রুয়ারি মোল্লা তাঁর ‘মুন্তখিবুত্-তওয়ারিখ’ লেখার কাজ সম্পন্ন করেন। পূর্বেই যা উল্লেখ করেছি, আকবর ও তাঁর সহমত-পোষণকারীদের বিরুদ্ধে মোল্লা নির্মম লেখনী তুলে নিয়েছিলেন হাতে, সেই কারণে গ্রন্থটি যাতে সম্ভাব্য সঙ্কটের মধ্যে না পড়ে এবং সুরক্ষিত অবস্থায় পরবর্তী প্রজন্মের হাতে গিয়ে পৌছায়, তার বন্দোবস্ত করেছিলেন।
সাতান্ন বছর বয়সে বদায়ূনে মোল্লার মৃত্যু হয়। সন্নিকটস্থ আতাপুরের আম্রকাননে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। হতে পারে, তখনকার দিনে আতাপুর শহরের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তবে বর্তমানে দূরে সরে গেছে। আজাদ লিখেছেন— “সেখানে একটি ক্ষেতে তিন-চারটি কবর আছে, তার উপর তিন-চারটি আমের গাছ আছে।
সেটাকে মোল্লার বাগান বলা হয়। লোকে বলে, ওই কবরগুলোর মধ্যে মোল্লা সাহেবেরও কবর আছে । আতাপুর ও বাগে-অম্বার (আম্রকাননের) কেউ নামও জানে না। যে-মহল্লায় তাঁর বাসভবন ছিল, সেখানে এখনও তিনি লোকের মুখে মুখে রয়েছেন। বলা হয় পতঙ্গী- টিলা, সৈয়দওয়াড়ায়।” লোকজনের মুখে শোনা যায়, তাঁর সন্তানদের মধ্যে এক কন্যা জীবিত ছিলেন,
বর্তমানে তাঁর সন্তান-সন্ততি রয়েছে সীতাপুর জেলার খয়রাবাদে। ৯৯৯ হিজরীতে (১৫৯০-৯১ খ্রিস্টাব্দে) মোল্লা অসুস্থ হয়ে বদায়ূন গেলেন। বিসাওয়র থেকে পরিবারকেও সেখানে নিয়ে এলেন। দরবারে উপস্থিত হওয়ার জন্য হুকুম আসতে লাগল। আকবর তখন কাশ্মীরের উদ্দেশে যাত্রাকালে ভিনওয়ারে অবস্থান করছিলেন। সেখানেই হাজির হলেন তিনি। বাদশাহ জিজ্ঞাসা করলেন— “কতদিন পরে এলেন?” মোল্লা জবাব দিলেন— “পাচ মাস পরে।” জানতেন, খুব থাকবেন, তাই বদায়ূনের অমাত্যদের ও হাকিম অয়নুল-মুকের প্রমাণপত্র সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। আকবর সমস্ত পাঠ করালেন, তবু বললেন— “পাঁচ মাস ধরে অসুখ হয় না।” মোল্লা কুর্নিশ জানানোর অনুমতি পেলেন না ।
(সকল বন্ধু চলে গেল, তারা গিয়ে কাবার দরজা স্পর্শ করেছে। আমি অশক্ত পায়ে শরাবখানার দরজায় পড়ে রয়েছি। হাদীস-তত্ত্বের কোনো কথাই শিখিনি। ধর্মহীন সংসারহীন আমি অনর্থক পড়ে রয়েছি।) দরবারে অধর্মের ধুম চলছিল। লোকে ঝপাঝপ ‘দীন-ইলাহী’-তে ঢুকে পড়ছিল, দাড়ি-টাড়ি সাফ হয়ে যাচ্ছিল। তাঁদের মধ্যে আবার কয়েকজন আলিম ছিলেন, যাঁরা নিজেদের অদ্বিতীয় পণ্ডিত মনে করতেন। অভিজাত শেখদের চোগা-চাপকান পরা কয়েকজন বলতেন : আমরা হজরত গওসের পুত্র। আমাদের শেখ হুকুম দিয়েছেন, ভারতবর্ষের বাদশাহের দুর্বলতা দেখা দিয়েছে, তোমরা গিয়ে তাঁকে রক্ষা করো। এখানে এসেই তাঁরা দাড়ি মুড়িয়ে ফেললেন।
১৫৯৫ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই অক্টোবর ফৈজী দেহত্যাগ করেন। তাঁর উপর আঘাত হানতে মোল্লার কলম কখনও ক্লান্ত হয়নি। পরদিন হাকিম হামামও চলে যান। ১৫৯৬ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে ফেব্রুয়ারি মোল্লা তাঁর ‘মুন্তখিবুত্-তওয়ারিখ’ লেখার কাজ সম্পন্ন করেন। পূর্বেই যা উল্লেখ করেছি, আকবর ও তাঁর সহমত-পোষণকারীদের বিরুদ্ধে মোল্লা নির্মম লেখনী তুলে নিয়েছিলেন হাতে, সেই কারণে গ্রন্থটি যাতে সম্ভাব্য সঙ্কটের মধ্যে না পড়ে এবং সুরক্ষিত অবস্থায় পরবর্তী প্রজন্মের হাতে গিয়ে পৌছায়, তার বন্দোবস্ত করেছিলেন।
সাতান্ন বছর বয়সে বদায়ূনে মোল্লার মৃত্যু হয়। সন্নিকটস্থ আতাপুরের আম্রকাননে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। হতে পারে, তখনকার দিনে আতাপুর শহরের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তবে বর্তমানে দূরে সরে গেছে। আজাদ লিখেছেন— “সেখানে একটি ক্ষেতে তিন-চারটি কবর আছে, তার উপর তিন-চারটি আমের গাছ আছে। সেটাকে মোল্লার বাগান বলা হয়। লোকে বলে, ওই কবরগুলোর মধ্যে মোল্লা সাহেবেরও কবর আছে । আতাপুর ও বাগে-অম্বার (আম্রকাননের) কেউ নামও জানে না। যে-মহল্লায় তাঁর বাসভবন ছিল, সেখানে এখনও তিনি লোকের মুখে মুখে রয়েছেন। বলা হয় পতঙ্গী- টিলা, সৈয়দওয়াড়ায়।”
আরও দেখুনঃ