বীরবলের মৃত্যু, বীরবল সৈন্য নিয়ে সওয়াতের দিকে অগ্রসর হলেন। অটকের কাছে সিন্ধু অতিক্রম করলেন। তারপর আরও অগ্রসর হয়ে বিশ্রামস্থল ডোকে উপস্থিত হলেন। সম্মুখে পাহাড়ের ভিতর দিয়ে সঙ্কীর্ণ পথ চলে গেছে। উভয় পার্শ্বে পাহাড়ে আত্মগোপন করে আছে আফগানরা। সেখানেই সংগ্রাম শুরু হলো। বহু আফগান নিহত হলো, কিন্তু বাদশাহের সৈন্যবাহিনীকেও প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করে নিয়ে পশ্চাদপসরণ করতে হলো।
বীরবলের মৃত্যু | বীরবল | আকবর
বাদশাহ হাকিম আবুল ফতাহের নেতৃত্বে আরও সাহায্য পাঠিয়েছিলেন, মালাকন্দ উপত্যকা হয়ে জৈন খাঁর সৈন্যের সঙ্গে তাদের মিলিত হওয়ার কথা। জৈন খাঁ অগ্রসর হয়ে বাজৌর পৌছলেন। সেখানকার শান্ত জনপদগুলো ধ্বংস করলেন, লোকজনের উপর মারকাট অত্যাচার চালিয়ে তাদের এমন অতিষ্ঠ করে তুললেন যে অনেক সওয়াতী সর্দার বশ্যতা স্বীকার করে তাঁর নিকটে উপস্থিত হলেন।
এবার তাঁর নজর প্রধান সওয়াৎ উপত্যকার উপর। সেদিকে অগ্রসর হলেন তিনি। পাঠানরা এত গোলাগুলি ও প্রস্তর বর্ষণ করল যে বাদশাহের সৈন্যবাহিনীর অগ্রভাগ পশ্চাৎপদ হতে বাধ্য হলো । জৈন খাঁ পথ থেকে দুশমনদের অপসারণ করতে করতে চকদরায় উপস্থিত হয়ে শিবির সংস্থাপন করলেন এবং সেখানে ব্যুহ রচনা করলেন— চকদরা সওয়াতের ঠিক মধ্যে। তখন সওয়াতের করাকর পাহাড় ও বুনের অঞ্চলই অনধিকৃত ছিল, বাকি অংশে আকবরের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল ।
এমন সময় বীরবল ও হাকিম আবুল ফতাহ্ সামান্য আগে পিছে সেখানে এসে উপস্থিত হলেন। বীরবলের সঙ্গে জৈন খাঁর এক-আধটু মনোমালিন্য ছিল। কিন্তু বাদশাহ যখন তাঁকে সৈন্যবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়ে প্রেরণ করেছেন, তখন তাঁকে স্বাগত জানানো সমীচীন বোধ করলেন জৈন খাঁ।
তিনি নিজের শিবিরে যথেষ্ট আয়োজন করে তাঁদের অভ্যর্থনা জানালেন। হাকিম, বীরবল ও জৈন খাঁর এই সম্মিলন আরও মতভেদ- বৃদ্ধির কারণ হয়ে উঠল। কেউ কারো কথা মেনে নিতে প্রস্তুত নন। ইতিহাস-লেখক জৈন খাঁকে “সৈনিকের পুত্র, সিপাহীর হাড্ডি, শৈশব থেকে লড়াই করতে করতেই বড় হয়েছে” বলে প্রশংসা করেছেন। হাকিম আবুল ফজল বুদ্ধিমান, দরবারে বাহাদুর।
কিন্তু এই দুর্গম পাহাড়ে রাস্তা বের করা তাঁর সামর্থ্যের বাইরে । বীরবল ব্রহ্মভট্ট হওয়ার জন্য ‘দরবারে আকবরী’ গ্রন্থের লেখক আজাদও তাঁর প্রতি সুবিচার করেন নি। তিনি বলেছেন— “বীরবল যেদিন থেকে সেনাপতি হয়েছেন, সেদিন থেকেই জঙ্গল-পাহাড় দেখতেন আর ঘাবড়াতেন। সব সময় ক্ষেপে থাকতেন এবং সঙ্গী-সাথীদের বলতেন : দেখুন, হাকিম আর কোকা পর্বতছেদকরা কোথায় নিয়ে গিয়ে পৌঁছায়।
তাঁদের সঙ্গে দেখা হলেই আজেবাজে কথা বলে ঝগড়া বাধাতেন।” আজাদ এখানে অন্য মুসলিম ইতিহাসবিদদের কথা উদ্ধৃত করেছেন, “এর দুটি কারণ ছিল। প্রথমত, তিনি ধনসম্পদের শার্দুল ছিলেন, তরোয়াল চালানোর মরদ ছিলেন না। দ্বিতীয়ত, বাদশাহের প্রিয়পাত্র ছিলেন। তাঁর একটা দম্ভ ছিল যে অন্যরা যেখানে যেতে পারে না, তিনি সেখানে অবলীলায় পৌছে যান।”
জৈন খাঁর অভিমত ছিল : আমার সৈন্যদের কিছু লোক চকদরার শিবিরে থেকে যাক এবং আশপাশের রক্ষণাবেক্ষণ করুক। কিছু সৈন্য আমার সঙ্গে সামনে অগ্রসর হোক। কিংবা আপনাদের মধ্যে যদি কেউ চান, সামনে অগ্রসর হতে পারেন । রাজা ও হাকিম দুজনের মধ্যে একজনও তাঁর কথায় সম্মত হলেন। না। তাঁরা বললেন— “হুজুরের আদেশ, লুঠপাট করে ওদের বরবাদ করে দাও।
দেশ জয় করা এবং তার উপর অধিকার কায়েম রাখা উদ্দেশ্য নয়। এদিক থেকে আমরা সবাই একটা সেনাবাহিনী হয়ে লোকজনকে মারতে মারতে তাড়াতে তাড়াতে এসেছি সেই রকমই অভিযান চালিয়ে অপর দিক দিয়ে বেরিয়ে হুজুরের কাছে গিয়ে পৌছব।”
কথা না শুনে নিজেরই সৈন্য নিয়ে বীরবল রওনা হলেন । বাধ্য হয়ে জৈন খাঁ এব অন্য সেনাপতিও ফৌজ ও যুদ্ধসামগ্রীর ব্যবস্থা করে পিছনে পিছনে চললেন। সারাদিনে পাঁচ ক্রোশ পথ অতিক্রম করলেন। পরের দিনের জন্য সিদ্ধান্ত হলো, “পথ দুর্গ সঙ্কীর্ণ উপত্যকা এবং সম্মুখে উঁচু পাহাড়, খাড়া চড়াই।
সেজন্য আধ ক্রোশ গিয়ে শিবির স্থাপন করা হবে। পরদিন সকালে রওনা হয়ে আরামে বরফাচ্ছাদিত পাহা অতিক্রম করে খাতিরজমায় গিয়ে ঘাঁটি গাড়া হবে। সর্দারকে পত্র দেওয়া হলো।” চল পাত গাড়া হবে। এরূপ মতাবলম্বন করে সকল ঊষাকালে সৈন্যরা রওনা দিল । অগ্রবর্তী সৈন্য একটা টিলায় চড়ে নিশান দেখাল এমন সময় আফগানরা দৃশ্যমান হলো। সহসা উপরে-নিচে ডাইনে-বাঁয়ে থে একযোগে আক্রমণ শুরু করে দিল তারা।
বাদশাহের সৈন্যরা প্রতিরোধ করল, মারতে মারতে হঠাতে হঠাতে এগিয়ে চলল। অবশেষে পুরোভাগের সৈন্য এবং তাদের স অন্যান্য সৈন্যরাও নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে শিবির স্থাপন করল । বীরবলকে কেউ খবর দিয়েছিল— সেখানে রাত্রিবেলা আফগানদের হামলার আছে। আরও চার ক্রোশ সামনে এগিয়ে গেলে আর সেই বিপদের ভয় নেই। বীর নির্ধারিত স্থানে শিবিরে সংস্থাপন না করে সম্মুখে এগিয়ে চললেন। ভাবলেন, এই
যথেষ্ট বেলা আছে, চার ক্রোশ হেঁটে যাওয়া কঠিন নয়। সেখানে পৌছলে হওয়া যাবে । খোলা মাঠে পৌঁছে গেলে আর আশঙ্কার কারণ থাকবে না । পশ্চাদ আমির আপনা থেকেই এসে যাবেন। কিন্তু এই চার ক্রোশ সমতলের পথ নয়, পথের মধ্যেও সর্বাপেক্ষা কঠিন পথ।
“চারদিকের পাহাড়গুলোতে বৃক্ষরাজি অরণ্য। পথ এত সঙ্কীর্ণ যে দু’তিনজন মানুষ বড় কষ্টে একসঙ্গে যেতে পারে। পথ বলব কি, পাথরের চড়াই-উত্রাইয়ে একটা আঁকাবাঁকা রেখা। একমাত্র ঘোড়ারই সাহস আছে চলার। ঘোড়াগুলোই পা ফেলে ফেলে হেঁটে চলেছে।” কোথাও বাম দিকে কোথাও বা ডানদিকে, পথের উভয় পার্শ্বে গভীর খাদ, সেদিকে তাকালেই বুক কেঁপে ওঠে। দিনভর পথ অতিক্রম করে তারা একটা পাহাড়ের উপর গিয়ে পৌছল। সে- জায়গাটা খোলা মাঠের মতো। দূরে দূরে পাহাড়ের চূড়া দৃষ্টিগোচর হচ্ছে। নিচে নেমে যাওয়া একটা পার্বত্য পথে এসে পৌছল তারা, তারপর সম্মুখে আকাশের সঙ্গে আলাপচারী পর্বত-প্রাচীর।
কত ক্রোশ রাস্তা হেঁটে হেঁটে অবশেষে একটা উপত্যকা দেখা দিল। সেই নির্জন ভয়ঙ্কর উপত্যকা থেকে তারা এক অজানা দিশায় হলো। “ অগ্রসর পিছনের সৈন্যরা যখন পূর্ব থেকেই নির্ধারিত শিবির-সংস্থাপনের জায়গায় পৌঁছে ডেরা পাতল, তখন তাদের মালুম হলো, বীরবল সামনে এগিয়ে গেছেন। সুতরাং পুনরায় শিবির গুটিয়ে রওনা হলো তারা। পথে পাঠানদের আক্রমণের কঠিন মোকাবিলা করতে হলো। বহু ক্ষতি স্বীকার করে তবেই, মন্দের ভালো, কোনো রকমে তারা যথাস্থানে উপস্থিত হলো। সলা-পরামর্শ চলছে, কিন্তু তিনজন সেনাপতি একমত হতে পারছেন না।
পরদিন ডেরা তুলে ফের রওনা হলো তারা। ঘাঁটি ছাড়তেই যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। চারদিক থেকে পাঠানরা আক্রমণ করছে। রাস্তা বড়ই সঙ্কীর্ণ, যার ফলে মোগল সৈন্যের সংখ্যাধিক্য সত্ত্বেও সামরিক শক্তি পুরোপুরি ব্যবহার করা সম্ভব ছিল না। সন্ধ্যা হলে আফগানদের সাহস আরও বেড়ে গেল, কারণ সেটা ওদের দেশ, সেখানকার পাহাড়-পর্বতের এক-এক আঙুল মাটির সঙ্গেও তারা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পরিচিত। তীর ও পাথর বর্ষণ শুরু হলো। অন্ধকার হলে সেই বর্ষণের মাত্রা আরও তীব্র হয়ে উঠল। বহু সৈন্য নিহত হয়েছিল। অপরিসর রাস্তায় মানুষ, ঘোড়া, হাতির মৃতদেহ পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেল।
ঘোড়ায় চড়েও সম্মুখে অগ্রসর হওয়া যায় না। জৈন খাঁ ঘোড়া বাদ দিয়ে পায়ে হেঁটে চললেন। বহু কষ্টে সামনের ঘাঁটিতে গিয়ে পৌঁছলেন। আবুল ফতাহ্-ও কোনমতে সেখানে পৌঁছে গেলেন, কিন্তু বীরবলের সন্ধান নেই। ইউশুফ্ জঈ হিসেব দিয়েছেন। বাদশাহের পঞ্চাশ হাজার সৈন্যের মধ্যে অতি অল্প- সংখ্যক সৈন্যকেই জীবিতাবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। জৈন খাঁ এবং আবুল ফতাহ্ প্রাণ বাঁচিয়ে সেই যে দৌড় শুরু করেছিলেন, একেবারে অটকে এসেই দম ফেলেছিলেন তাঁরা ৷ বাদশাহ যখন জানতে পারলেন যে সওয়াতের যুদ্ধে বীরবল জীবনোৎস করেছেন, তখন তাঁর দুঃখের সীমা-পরিসীমা রইল না।
সিংহাসনে আসীন হওয়ার পর আজ পর্যন্ত কখনও তাঁর এত অনুতাপ হয়নি। দু’দিন দু’রাত স্তব্ধ হয়ে বসে রইলেন খাবারও খেলেন না । মা মরিয়ম মাকানী অনেক বোঝালেন, অনেক কান্নাকাটি করলেন তবেই তিনি কিছু মুখে তুললেন। আবুল ফতাহ্ ও জৈন খাঁর উপর ভীষণ অস হয়েছিলেন, তাঁদের সালাম জানাতেও নিষেধ করে দিয়েছিলেন। বীরবলের শবদে উদ্ধারের জন্য অনেক অনুসন্ধান করা হলো, কিন্তু পাওয়া গেল না।
সেনাপতি দুজনের তো কোনো অপরাধ ছিল না। কিন্তু বীরবলের মতো সব সময়ের বন্ধু আকবর কোথায় পাবেন? তাঁর আরও বেশি দুঃখের কারণ, তিনি তাঁর বন্ধুর শব-সৎকারও করতে পারলেন না। শেষে আক্ষেপ করতে করতে নিজেকে এই বলে সান্ত্বনা দিলেন— “যাক, এখন তিনি সমস্ত বন্ধন থেকে মুক্ত, পবিত্র, নির্লিপ্ত।” লোকে নানা রকম খবর নিয়ে আসে আকবরের কাছে। কেউ বলে— তিনি মারা যান নি, সন্ন্যাসী হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ আবার বীরবলকে কারো সঙ্গে কথা বলতেও দেখেছেন।
আকবর নিজে বলেন— তিনি বিষয়-আশয়ে অত্যন্ত নিরাসক্ত ও সঙ্কোচ-পরায়ণ ব্যক্তি ছিলেন। পরাজয়ের ফলে যদি তিনি সাধু-সন্ত হয়ে চলে যান, তাহলে বিস্ময়ের কিছু নেই। আকবর তখন লাহৌরে ছিলেন, সেই সময় কোনো একজন বলল যে বীরবল কাঁড়ায় রয়েছেন। খুঁজতে লোক পাঠানো হলো, কিন্তু তিনি তো সওয়াতের উপত্যকায় চিরনিদ্রায় শায়িত। কালিঞ্জর বীরবলের জায়গির ছিল । সেখানে বীরবলের পূর্বপরিচিত এক ব্রাহ্মণ জানাল— বীরবল তার নজর এড়াতে পারেননি। তিনি জীবিত, তবে আত্মগোপন করে আছেন।
সে মিছামিছি একজন মুসাফিরকে বীরবল বানিয়ে নিজের কাছে আটকে রেখেছিল। যখন বাদশাহের হুকুম এসে পৌঁছল তাঁকে দরবারে হাজির করতে, তখন ব্রাহ্মণের টনক নড়ল। নকল বীরবলকে পাঠালে সমূহ বিপদ, সেজন্য তাকে মেরে ফেলা হলো। তারপর একজন নাপিতকে দরবারে পাঠিয়ে দেওয়া হলো, সে জানাল, মালিশ করার সময় তাঁর শরীর দেখে তিনি যে বীরবল তা বুঝতে পারে। বীরবলের দ্বিতীয়বার মৃত্যুর খবর শুনে দরবারে দ্বিতীয়বার শোক পালন করা হলো।
কালিঞ্জরের নায়েব ও অন্যান্য কর্মচারীকে ডেকে পাঠানো হলো। সম্রাটের কাছে যথাসময়ে কেন খবর দেওয়া হয়নি, সেই অপরাধে তাঁদের কারারুদ্ধ করা হলো। হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে তবেই তাঁরা জেল থেকে মুক্তিলাভ করেন । বীরবলের মনসব ছিল মাত্র দু’হাজারের, কিন্তু তা দিয়ে তাঁর পদমর্যাদা মাপা যেত না ।
মোল্লা বদায়ূনী বীরবলকে অভিশপ্ত, বিধর্মী, অধার্মিক, কুকুর ইত্যাদি বলে নিজের ক্ষোভ প্রশমিত করেছেন। বীরবল হাসি-ঠাট্টায় ইসলাম ধর্ম এবং মোল্লাদের দুর্গতির একশেষ করে ছাড়তেন, সেজন্য মোল্লা বদায়ূনীর অসন্তুষ্ট হওয়ারই কথা।
তাঁর মতে লোকেরা বিশ্বাস করতেন যে বীরবলই বাদশাহকে হিন্দুধর্মের দিকে আকৃষ্ট করে সাহায্য করেছেন । আকবরের আমলে আগরার বাজারে বারান্দায় বারান্দায় এত বেশ্যা দেখা যেত “আকাশে অত তারাও চোখে পড়ত না”। আকবর তাদের সকলকে শহর থেকে করে দিয়ে একটা আলাদা পল্লী বানিয়ে দিয়েছিলেন এবং সেই পল্লীর নাম রেখেছি শয়তানপুরা। সেখানে যাতায়াতকারীদের নিজেদের নাম লেখাতে হতো।
বীরব কখনও একবার সেখানে গিয়ে পৌঁছেছিলেন। সে-খবর বাদশাহের কানে আ বীরবল জানতেন যে বাদশাহ তাঁর উপর ভীষণ ক্ষুব্ধ হবেন। লজ্জায় তিনি নি জায়গির কোড়া-ঘাটমপুরে চলে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন যে বাদশা সব খবরই পেয়ে গেছেন। ভীষণ সন্ত্রস্ত হয়ে তিনি বলেন— আমি সন্ন্যাসী হয়ে চলে যাব। বাদশাহ সেকথা জানতে পেরে ফরমান জারি করে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে তাঁকে ঠাণ্ডা করে ফিরিয়ে আনেন । সমকালীন ঐতিহাসিকেরা বীরবলের প্রতি সুবিচার করেন নি, তাঁর কথা ও
কৃতিত্বেরও উল্লেখ করেন নি, কিন্তু জনসাধারণ তাঁকে মর্যাদা দিয়েছেন, তাতে সেই ঘাটতি পূরণ হয়ে গেছে। বীরবলের দুই পুত্র— লালা ও হরমরায়ের সন্ধান পাওয়া যায়। লালা ১০১০ হিজরীতে (১৬০১-২ খ্রিস্টাব্দে) চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে, এলাহাবাদে গিয়ে সলীমের নিকট চাকরিতে যোগদান করেন। বীরবল কবিরায় ছিলেন, তবে দুঃখের বিষয়, তাঁর কোনো রচনা পাওয়া যায় না ।
আরও দেখুনঃ